শুক্রবার, ৭ নভেম্বর ২০২৫
 

পিরোজপুরে চেয়ারম্যান শাহিনকে রক্ষা করতে গিয়ে বিপাকে জাকারিয়া হোসেন ‎

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ৭ নভেম্বর ২০২৫

---

 

পিরোজপুর প্রতিনিধি

 

‎পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলা জাতীয় পার্টির (জেপি-মঞ্জু) আহ্বায়ক ও পত্তাশী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদারকে রক্ষা করতে গিয়ে তাকে উল্টো হামলার অভিযোগের শিকার হয়েছেন পশ্চিম বালিপাড়া গ্রামের মোঃ জাকারিয়া হোসেন মুন্সী। ঘটনাটি ঘটেছে গত বুধবার (৪ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে পিরোজপুর সদর উপজেলার বড় পোল এলাকায়। ‎ ‎এ ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন করেছে জাকারিয়া হোসেন মুন্সী। শুক্রবার (৭ নভেম্বর) বেলা ১২ টায় পিরোজপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি। ‎‎জানা গেছে, ওই সময় জাকারিয়া হোসেন মোটরসাইকেলে করে সদর থেকে ইন্দুরকানীর দিকে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে বড় পোলের কাছে মানুষের ভিড় দেখে তিনি সেখানে থামেন। এ সময় তিনি দেখতে পান একটি কালো রঙের নোয়া মাইক্রোবাস থেকে কয়েকজন ব্যক্তি পত্তাশী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহিন হোসেনকে নামানোর চেষ্টা করছেন। ‎ ‎সংবাদ সম্মেলনে জাকারিয়া হোসেন বলেন, তিনি পরিস্থিতি দেখে শাহিন চেয়ারম্যানকে রক্ষা করার চেষ্টা করেন এবং এক পথচারীকে পুলিশে খবর দিতে বলেন। কিছুক্ষণ পর সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শাহিন চেয়ারম্যানকে থানায় নিয়ে যায়। ‎‎জাকারিয়ার দাবি, তিনি পুলিশের গাড়ির পেছনে থানায় যান, কিন্তু সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি পাল্টে যায়। শাহিন চেয়ারম্যান অভিযোগ করেন, জাকারিয়া তার গতিপথ রোধ করেছেন। পরে পুলিশের উপস্থিতিতে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মাধ্যমে বিষয়টি মীমাংসা হয় এবং চেয়ারম্যান লিখিতভাবে জানান যে, জাকারিয়ার বিরুদ্ধে তার কোনো অভিযোগ নেই। তবে পরবর্তীতে শাহিন চেয়ারম্যান মিডিয়ার কাছে অভিযোগ করেন, জাকারিয়া তাকে মারধর করেছেন এবং তার দুটি মোবাইল নিয়ে গেছেন। জাকারিয়া হোসেন এই অভিযোগকে ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন’ বলে দাবি করেন এবং বলেন, তার সম্মানহানি ও সামাজিক সুনাম নষ্ট করার উদ্দেশ্যে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। ‎ ‎তিনি অভিযোগ করে বলেন, শাহিন হাওলাদার জাতীয় পার্টি (মঞ্জু)–এর ইন্দুরকানী উপজেলা আহ্বায়ক হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্ব পালন করছেন এবং তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ‎ ‎জাকারিয়া হোসেন বলেন, আমি ফ্যাসিবাদের দোসর শাহিন চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি। আমার বিরুদ্ধে তার আনিত অভিযোগগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

 

‎‎এদিকে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মঞ্জু-সমর্থিত ক্ষমতার জোরে চেয়ারম্যান হওয়ার পর শুধু পত্তাশী ইউনিয়ন নয়, পুরো উপজেলার প্রশাসনিক কার্যক্রমে একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন শাহীন। তাঁর বিরুদ্ধে মুজিববর্ষের ঘর প্রকল্পে অর্থ আত্মসাৎ, ইউনিয়নে চৌকিদার ও দফাদার নিয়োগে লাখ লাখ টাকার ঘুষ গ্রহণ, ভিজিডির চাল চুরির অভিযোগ, সরকারী গাছ কেটে বিক্রি, বিভিন্ন প্রকার ভাতার কার্ড বিতরণে আর্থিক কেলেঙ্কারি এবং ইউপি সদস্যদের প্রাপ্য সুবিধা বঞ্চিত করার অভিযোগ রয়েছে।

 

এসব কারণে ইউনিয়ন পরিষদের অধিকাংশ সদস্য তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবও দিয়েছিলেন এবং তা বিধি মোতাবেক উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে জেলা প্রশাসক বরাবরে পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু অজ্ঞাত কারনে দীর্ঘদিন পার হয়ে যাওয়ার পরও ইউপি সদস্যদের আবেদনের কোন সুরাহা হয়নি। ‎‎এ বিষয়ে পত্তাশী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ মিথ্যা। তারা উল্টো আমার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয় এবং আমাকে হেনস্থা করে। ‎‎সংবাদ সম্মেলনে পত্তাশী ইউনিয়নের স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য

সর্বশেষপঠিত

এলাকার খবর

Developed By: Dotsilicon