বুধবার, ৬ আগস্ট ২০২৫
 

জুলাই স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বিবর্তন সংসদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ৬ আগস্ট ২০২৫

---
জাবি প্রতিনিধি
রক্তস্নাত জুলাই স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সাংস্কৃতিক চেতনার দীপ্তিতে প্রায় তিন দশক পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) এক সময়ের খ্যাতিমান সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘বিবর্তন সংসদ’ নতুন করে যাত্রা শুরু করেছে।

সোমবার (৪ আগস্ট) রাত সাড়ে আটটা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেলিম আল দীন মুক্তমঞ্চে এই ঐতিহাসিক নবযাত্রাকে স্মরণীয় করে রাখতে সংগঠনের সাবেক শিল্পী, পৃষ্ঠপোষক ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের সম্মিলিত প্রয়াসে আয়োজন করা হয় এক বর্ণাঢ্য অভিষেক অনুষ্ঠান।

মূল অনুষ্ঠানটি দুই পর্বে বিভক্ত ছিল—প্রথম অংশে ছিল সঙ্গীতানুষ্ঠান, যেখানে সংগঠনের বর্তমান ও প্রাক্তন সদস্যরা পরিবেশন করেন দেশাত্মবোধক ও মানবতাবাদী গান। দ্বিতীয় পর্বে মঞ্চস্থ হয় মৌলিক নাটক “অন্তহীন যাত্রায় আমরাও যাত্রী”, যার রচনা ও নির্দেশনায় ছিলেন নাট্যতত্ত্ব বিভাগের ৪৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আমিনুল ইসলাম জিসান।
নাটকটির কাহিনি বিন্যাসে উঠে আসে ১৯৪৭ থেকে শুরু করে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বাঙালির রাজনৈতিক পটভূমিতে ফ্যাসিবাদের পুনরাবৃত্ত রূপ এবং এর বিরুদ্ধে বাঙালি জাতির প্রতিরোধ-সংগ্রামের ধারাবাহিকতা। ১৯৪৭-এর দেশভাগ থেকে শুরু করে ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনসহ সাম্প্রতিক সময়ের গণপ্রতিরোধ—সবকিছুরই প্রতিচ্ছবি শিল্পিত ভঙ্গিতে নাটকে চিত্রায়িত হয়। নাটকের মূল বার্তা ছিল—এই সংগ্রাম এখনো শেষ হয়নি, বরং চলমান ইতিহাসের ধারায় আমাদের প্রত্যেককেই হতে হবে যাত্রার যাত্রী।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, “বিবর্তন সংসদের পুনর্জাগরণ আমাদের সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে এক নতুন প্রাণের সঞ্চার ঘটাবে। এই সংগঠন অতীতেও যেমন আলো ছড়িয়েছে, ভবিষ্যতেও তা করবে বলেই আমি আশাবাদী।”
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় বিবর্তন সংসদের সদস্য সচিব মনীষা হক বলেন, প্রথম প্রোগ্রাম হিসেবে খুবই অল্প সময়ের মধ্যে আমরা অনুষ্ঠানটি করেছি। এই আয়োজন আমাদের জন্য ছিল এক নতুন সূচনার প্রতীক। খুবই অল্প সময়ের মধ্যে আমরা অনুষ্ঠানটির পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন করেছি। নাটকটি মঞ্চে তোলার প্রক্রিয়াও ছিল চ্যালেঞ্জিং—কারণ আমাদের অংশগ্রহণকারীদের অধিকাংশই একেবারেই নতুন, যারা এর আগে কখনও মঞ্চনাটক বা থিয়েটারের সঙ্গে যুক্ত ছিল না। তবুও প্রত্যেকেই নিজেদের সেরাটা দিয়েছে। সেই হিসেবে সবাই দুর্দান্ত পারফর্মেন্স করেছে এবং সবার প্রচেষ্টা অনেক ভালো ছিল। আমি বিশ্বাস করি, ভবিষ্যতে আমরা একসঙ্গে থাকলে আরও বড় এবং ভালো কিছু করতে পারবো।
বিশেষ অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. সৈয়দ মোহাম্মদ কামরুল আহছান এবং অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী—খ্যাতিমান অভিনেতা ও পরিচালক, দৃশ্যপট নাট্যদল এবং পরিচালক, প্রকাশনা ও মুদ্রণ বিভাগ, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়। বক্তারা সবাই সংগঠনের নবযাত্রার প্রশংসা করেন এবং ভবিষ্যতে এর কার্যক্রমকে আরও প্রসারিত করার আহ্বান জানান।

মন্তব্য

সর্বশেষপঠিত

এলাকার খবর

Developed By: Dotsilicon