গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ‘জুলাই পদযাত্রা’কে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোর হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া শিশুদের বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
গতকাল রবিবার (২৭ জুলাই) সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবীর করা এক রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে বিচারপতি কাজী জিনাত হক ও বিচারপতি আইনুন নাহার সিদ্দিকীর হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এই আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন আবেদনকারী দুই আইনজীবী উৎপল বিশ্বাস ও আবেদা গুলরুখ। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নূর মুহাম্মদ আজমী।
আইনজীবী উৎপল বিশ্বাস সাংবাদিকদের জানান, সংবাদমাধ্যমে তারা দেখেছেন, নয়জন শিশুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি প্রশ্ন তোলেন, এসব শিশুর ক্ষেত্রে শিশু আইন অনুসরণ করা হচ্ছে কি না, এবং যদি না হয়, তবে কেন হচ্ছে না। এই বিষয়গুলো চ্যালেঞ্জ করে তারা রিট করেন। আদালত সেই রিটের ওপর রুল জারি করেছেন এবং একটি নির্দেশনাও দিয়েছেন যে, শিশুদের বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে। এই কমিটি শিশু আইন অনুসরণ করা হচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখে আগামী ৫ নভেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করবে।
ঘটনার বিস্তারিতঃ-
গত ১৬ জুলাই এনসিপির কর্মসূচিতে হামলার ঘটনা ঘটে। এরপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে আওয়ামী লীগের সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত হন এবং অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে জেলা প্রশাসক সেদিন প্রথমে ১৪৪ ধারা জারি করেন, এবং রাতেই কারফিউ জারি করা হয়। পরবর্তীতে কারফিউর মেয়াদ কয়েক দফায় বাড়ানো হয়েছিল।
এই ঘটনায় গোপালগঞ্জের সদর, কাশিয়ানী, কোটালীপাড়া ও টুঙ্গিপাড়া থানায় পুলিশের ওপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ এবং রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপে জড়ানোর অভিযোগে মোট ১২টি মামলা করা হয়েছে। এর মধ্যে পাঁচটি হত্যা মামলা, একটি বিশেষ ক্ষমতা আইনে এবং ছয়টি সন্ত্রাস দমন আইনে দায়ের করা হয়েছে।
এই ১২টি মামলায় মোট ১০,১৮৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ৬৮৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং ৯,৫০০ জন অজ্ঞাতনামা আসামি রয়েছেন। গত ১৬ জুলাই থেকে এ পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ৩৩৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মন্তব্য