কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি,
অনিয়মিত অফিস করা, প্রশাসনের সিদ্ধান্ত না মেনে বিদ্যুৎ অপচয় সহ বেশ কিছু অভিযোগে স্ট্যান্ড রিলিজ দিয়ে উপ রেজিস্ট্রার রেবেকা সুলতানাকে বঙ্গমাতা হলে বদলি করেছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
নিজ দপ্তরে অনুপস্থিত থাকা অবস্থায় অফিস কক্ষে ফ্যান চলা সহ অনিয়মিত অফিস করার বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও প্রকাশ হয়। যা বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রেসক্লাবের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকের একটি পেইজে ভিডিও প্রকাশের পর উপ রেজিস্ট্রার রেবেকা সুলতানা প্রশাসনের বিভিন্ন ব্যক্তিকে ফোন দিয়ে বিচার দেন সংগঠনটির সাংবাদিকদের নিয়ে। যেখানে বলতে শোনা গেছে সাংবাদিকরা কি জানে না আমি ওসির বউ। আমি কি করতে পারি ওরা জানে না? মূহুর্তেই এই বক্তব্যটি সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। বিপরীতে সন্ধ্যায় ওসির বউ পরিচয় দেয়া রেবেকা সুলতানাকে স্ট্যান্ড রিলিজ করে মেয়েদের হলে বদলি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
প্রশাসন সূত্রে জানা যায় বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্যের নজরে ছিলেন এই কর্মকর্তা। উপাচার্য নিজেও এটি নজরদারিতে রেখেছিলেন। অনেকগুলো অভিযোগ মিলেই এই স্ট্যান্ড রিলিজ।
এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ভবনে আধিপত্য বিস্তার করে একটি বলয় গড়ে তোলারও অভিযোগ রয়েছে। বারবার তার বিষয়ে বিভিন্ন অভিযোগ সামনে আসলেও প্রশাসন তার বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি।
তবে ওসির বউ পরিচয় দিয়ে সাংবাদিকদের শাসানো কর্মকর্তা উপ রেজিস্ট্রার রেবেকা সুলতানা গণমাধ্যমকে বলেন, আমি সাংবাদিকদের নিয়ে কোন মন্তব্য করিনি। আমার কোন প্রশাসনিক সিন্ডিকেট নেই। আমি একজন ছোট কর্মকর্তা অফিস করি নিয়মিত। আমি ছুটিতে আছি এই সময়ে আমার রুমে কিছু হলে সেটা আমি দায়ী না। ভিসি আর রেজিস্ট্রার এর রুমেও তো খালি অবস্থায় বিদ্যুৎ এর ব্যবহার হয়। কই তখন তো কথা উঠে না।
এই কর্মকর্তা অস্বীকার করলেও তার একটি কল রেকর্ড গণমাধ্যমের কাছে এসেছে। যেখানে নিজেকে ওসির বউ দাবী করে সাংবাদিকদের শাসিয়ে কথা বলতে শোনা গেছে অন্য এক ব্যক্তির সঙ্গে। সেই কথোপকথনে তিনি বলেন, ওরাকি (সাংবাদিকরা) জানেনা আমি দারোগা, ওসি’র বউ? আমি কি করতে পারি এরা কি বোঝেনা? কিছু বলিনা দেখে সাহস বাইরা গেসে?
স্ট্যান্ড রিলিজ এর বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. হুমায়ুন কবীর বলেন, বৃহস্পতিবার রেজিস্ট্রার দপ্তরের উপ রেজিস্ট্রার রেবেকা সুলতানাকে রেজিস্ট্রার দপ্তর থেকে বদলি করে বঙ্গমাতা হলে হলে পাঠানো হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, প্রশাসনিক ক্ষমতা থাকায় নিজের মতো করে কাজ করেন তিনি। ছুটি না নিয়ে অফিস না করলেও আলোচনায় আসলে পেছনের তারিখ দিয়ে দেখায় যে তিনি ছুটির আবেদন করেই ছুটিতে ছিলেন। রেজিস্ট্রার দপ্তরের বস ও বড় আপা হিসেবেও পরিচিতি পেয়েছেন তিনি।
বদলি হওয়া উপ রেজিস্ট্রার রেবেকা সুলতানা জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাজী শাহনেওয়াজ এর স্ত্রী ।
স্বামীর পরিচয় ব্যবহার করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভয়ের সাম্রাজ্য গড়ে তোলার অভিযোগও রয়েছে এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। প্রশাসনকে চাপের মুখে রেখে অনেককে বদলিও করাতেন এই কর্মকর্তা।
মন্তব্য