![]()
সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ প্রতিনিধি:
রাজধানীতে শুক্রবারের ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের পুরাতন ভবন। ভূমিকম্পের পরপরই কলেজের বিভিন্ন ব্লকের দেয়াল, সিলিং ও সিঁড়িঘরে একাধিক স্থানে ফাটল দেখা দেয়।
২১ নভেম্বর সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে সংঘটিত ৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্পে ভবনের কিছু অংশে প্লাস্টার খসে পড়ে এবং কলাম–দেয়ালে বড় ধরনের চিড় ধরে।
সরজমিনে দেখা যায়, ভবনের বেশ কিছু কলামে গভীর ফাটল, দেয়ালের সংযোগস্থলে নতুন চির এবং সিলিংয়ের প্লাস্টার ঝরে পড়ে মেঝেতে ছড়িয়ে আছে। বিশেষ করে অডিটোরিয়াম ভবনের অভ্যন্তরে বড় আকারের ফাটল পরিস্থিতিকে আরও উদ্বেগজনক করে তুলেছে।
সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় শিক্ষার্থীরা আহত না হলেও ঘটনাটি জানাজানি হতেই শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অনেকের মতে, পুরোনো নির্মাণ এবং দীর্ঘদিনের রক্ষণাবেক্ষণের অভাবই ভবনের ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থার কারণ।
অনার্সের এক শিক্ষার্থী বলেন, “ভবনটা যে পুরোনো তা সবার জানা। কিন্তু আজকের ফাটলগুলো দেখে মনে হচ্ছে অবিলম্বে স্ট্রাকচারাল টেস্ট করা দরকার। শুক্রবারে ক্যাম্পাস ফাঁকা ছিল, না হলে বড় দুর্ঘটনা হতে পারত।”
অভিভাবকরাও একই আশঙ্কা প্রকাশ করেন। একজন বলেন, “আমাদের সন্তানরা প্রতিদিন এই ভবনে ক্লাস করে। ভবনটি যদি ঝুঁকিপূর্ণ হয়, তাহলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।” ভূমিকম্পের কম্পনে আশপাশের এলাকাতেও আতঙ্ক দেখা দেয়। অনেকে জানালা–দরজার তীব্র কাঁপুনি টের পেয়ে অল্প সময়ের জন্য বাসা থেকে বের হয়ে আসেন।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৫.৭ এবং উৎপত্তিস্থল নরসিংদীর মাধবদী, যা আগারগাঁও সিসমিক সেন্টার থেকে ১৩ কিলোমিটার পূর্বে। তথ্যটি নিশ্চিত করেছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।
ঘটনার পর কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ভবনের অবস্থা জরুরি ভিত্তিতে পরীক্ষা করতে প্রকৌশল বিভাগকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঝুঁকি চিহ্নিত হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ভবনের ক্ষতিগ্রস্ত অংশের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর সোহরাওয়ার্দী কলেজের পুরাতন ভবনের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। রানা প্লাজার মতো আরেকটি বিপর্যয় এড়াতে ভবনগুলো সংস্কার ও শক্তিশালীকরণের পদক্ষেপ নিতে এখনই সময়—এমন মত বিশেষজ্ঞ ও সচেতন শিক্ষার্থীদের।



মন্তব্য