যুগের কণ্ঠস্বর ডেস্ক
আলোচনার টেবিল থেকে সরে এসে এবার সরাসরি রাজধানীর রাজপথে নেমেছে দেশের সাতটি ইসলামী ঘরানার রাজনৈতিক দল। তাদের প্রধান দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে— জুলাই সনদের আইনি বৈধতা নিশ্চিত করা, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে পিআর পদ্ধতি চালু করা এবং নির্বাচনে সবার জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি করা। এ ছাড়া কেউ কেউ আওয়ামী লীগ ঘনিষ্ঠ দলগুলোর নির্বাচনে অংশগ্রহণে নিষেধাজ্ঞাও দাবি করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দিনভর ঢাকার বিভিন্ন স্থানে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। সরকারকে তীব্র সমালোচনা করে বক্তারা হুঁশিয়ারি দেন, দাবি না মানলে আরও কঠোর কর্মসূচিতে নামবেন তারা।
বিকেলের আগেই বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেট ভরে যায় জামায়াতের নেতা-কর্মীদের উপস্থিতিতে। জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ও পিআর পদ্ধতির দাবিতে আয়োজিত এ সমাবেশ শেষে গুলিস্তান ও পল্টন এলাকায় মিছিল করে তারা। জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, “জুলাই সনদ ছাড়া নির্বাচন মানে দেশকে বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দেওয়া। এ পথে গেলে দেশে আরেকটি স্বৈরাচার জন্ম নেবে, জনগণ তা মেনে নেবে না।”
একই সময়ে বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে সমাবেশ করে খেলাফত মজলিস। দলটির মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমেদ স্পষ্ট ভাষায় জানান, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত তারা ঘরে ফিরবেন না। তিনি বলেন, “মানুষ শখে রাজপথে নামে না। জুলাই সনদ যদি আইনগতভাবে কার্যকর না হয়, তাহলে আবারও স্বৈরাচার ফিরে আসবে।”
বিকেলে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশও মিছিল বের করে। দলটির সিনিয়র নায়েবে আমির সৈয়দ ফয়জুল করীম বলেন, “পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে কেউ আর এককভাবে স্বৈরাচার হতে পারবে না। ৮০ শতাংশ জনগণ এ পদ্ধতির পক্ষে।” তিনি অভিযোগ করেন, ভারত নাকি জুলাই সনদকে সমর্থন করছে না— এ নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।
এদিন প্রেসক্লাব ও বিজয়নগর এলাকায় খেলাফত আন্দোলন, নেজামে ইসলাম পার্টি ও আরও কয়েকটি সংগঠন আলাদা সমাবেশ ও বিক্ষোভ করে। আইনজীবী ও বিশ্লেষকরাও এ বিষয়ে প্রস্তাব দিয়েছেন— রাষ্ট্রপতির সাংবিধানিক আদেশ অথবা গণভোটের মাধ্যমে পিআর পদ্ধতি বাস্তবায়ন করা সম্ভব।
সব মিলিয়ে সাত দলের এই কর্মসূচি নির্বাচনের আগে নতুন করে উত্তাপ ছড়িয়েছে রাজনীতির মাঠে। বক্তাদের ভাষায়, “জুলাই সনদই হতে যাচ্ছে আগামীর বাংলাদেশ গড়ার মূল হাতিয়ার।”
মন্তব্য