শুক্রবার, ৩ মে ২০২৪
 

নওগাঁর হাসপাতাল গুলোতে বাড়ছে ডায়রিয়া রুগী

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১৮ এপ্রিল ২০২৪

---

রায়হান সাপাহার নওগাঁ প্রতিনিধি
নওগাঁয় গরমে অতিষ্ট মানুষ সহ পশু-পাখি। ঘর থেকে বাহিরে বেরোনো অনেকটা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে মানুষের। কিন্তু তারপরও জীবিকার তাগিদে বের হতে বাধ্য হচ্ছেন মানুষজন।
নওগাঁ জেলায় তাপমাত্রা ৩৫ থেকে ৩৭ দশমকি ৫ ডিগ্রী সেলসিয়াসের ঘরে। প্রচন্ড গরমে আক্রান্ত হচ্ছে, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, সর্দি ও জ্বরে। যার বেশির ভাগ বয়স্ক ও শিশু। হঠাৎ করে হাসপাতালে রোগীর ভীড় বাড়ায় সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসক ও নার্সদের। নওগাঁ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল সূত্র জানা যায়, এক সপ্তাহে অন্তত ৩শ’ রোগী ভর্তি হয়েছে। বেশির ভাগই বয়স্ক ও শিশু। হাসপাতালের ৫ম তলায় শিশু ওয়ার্ডের বেড সংখ্যা ১৫টি হলেও সেখানে ভর্তি রয়েছে ৫৬ জন। এর মধ্যে ডায়রিয়া রোগী ২৬ জন। তবে হাসপাতালে থেকে বাড়তি রোগীদের জন্য অতিরিক্ত বেডের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ২৪ ঘন্টায় হাসপাতালে ৭০ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। যার অধিকাংশ ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া রোগী।
জেলা সিভিল সার্জন অফিস এর তথ্যমতে, গত ৭ দিনে জেলার ১১টি উপজেলায় ডায়রিয়া চিকিৎসা নিয়েছে অন্তত ৭শ’ ৯৮ জন এবং কলেরা ২৪ জন। জেলার বদলগাছী আবহাওয়া পর্যবেক্ষনাগার সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৭ দশমকি ৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। আর সর্বোনিম্ন ২৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস। প্রচন্ড তাবদাহে কর্মজীবি মানুষদের কষ্ট বেড়েছে। হাপিয়ে উঠেছে শ্রমজীবী মানুষ। কর্মজীবী মানুষ বাইরে বের হলেই অতিরিক্ত ঘামে ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন।চিকিৎসকের পক্ষ থেকে প্রচন্ড গরমে ঘরের বাহিরের না যাওয়া, বিশুদ্ধ পানি ও তরল জাতীয় খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এছাড়া বাচ্চাদের শরীর ঘেমে গেলে তা মুছে দেওয়ার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। নওগাঁ জেলা সদর উপজেলার বরুনকান্দি গ্রামের গৃহবধু আয়েশা বলেন, বাচ্চার বয়স ৮ মাস। প্রচন্ড গরমে বাচ্চা কয়েক বার পাতলা পায়খানা করে। এরপর রাতেই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের বারান্দায় বেডের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাচ্চা কিছুটা সুস্থতা বোধ করছে। তবে হাসপাতাল থেকে ঔষধ পাওয়া গেলে একটু ভাল হতো। হাসপাতলে প্রচুর রোগীর চাপ।
জেলার মান্দা উপজেলা থেকে আসা নুরুল ইসলাম বলেন, বাচ্চার বয়স এক বছর। হঠাৎ করেই বাচ্চা অসুস্থ হয়ে বমি ও পাতলা পায়খানা শুরু করলে স্থানীয় চিকিৎককে দেখানো হয়। পরবর্তীতে তার পরামর্শে হাসপাতালে গত রাতে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতাল থেকে খাওয়ার স্যালাইন দেয়া হয়েছে। তবে কলেরা স্যালাইন সহ অন্যান্য ঔষধ প্রায় ৫শ টাকা বাহির থেকে কিনতে হয়েছে। বাচ্চা এখন কিছুটা সুস্থ। শিশু ওয়ার্ডের সিনিয়র স্টার্ফ নাস সিমা খাতুন বলেন, গত কয়েক দিন থেকেই রোগীর চাপ। বিশেষ করে ডায়রিয়া রোগী। আমরা ৯ জন স্টার্ফ। পর্যায়ক্রমে ডিউটি করতে হচ্ছ। হঠাৎ রোগীর চাপ সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে আমাদেরকে। এছাড়া হাসপাতাল থেকে যেসব ঔষধ সরবরাহ করা হয়েছে তা রোগীদের দেয়া হচ্ছে।
নওগাঁ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ জাহিদ নজরুল চৌধূরী বলেন, রজমানে রোজায় ভাজা পোড়া সহ অনিয়মত খাওয়া এবং প্রচন্ড গরমের কারণে মানুষের শরীরে একটা প্রভাব পড়েছে। এতে করে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, সর্দি ও জ্বর হচ্ছে। হঠাৎ করে রোগীর চাপ বাড়ায় সেবা দিতে গিয়ে চিকিৎসক ও নার্সদের হিমশিম খেতে হচ্ছেন। তবে পর্যাপ্ত ঔষধ হাসপাতাল থেকে সরবরাহ করা হচ্ছে।
পরামর্শ দিয়ে তিনি আরো বলেন, প্রচন্ড গরমে প্রয়োজন ছাড়া রোদে বা ঘরের বাহিরে না যাওয়া। বাহিরের খাবার না খাওয়া। বিশুদ্ধ পানি খাওয়া ও বেশি করে তরল জাতীয় খাবারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এছাড়া বাচ্চাদের শরীর ঘেমে গেলে তা মুছে দেওয়ার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

মন্তব্য

পঠিতসর্বশেষ

এলাকার খবর

Developed By: Dotsilicon