রবিবার, ১২ মে ২০২৪
 

মাছের ট্যাংকে গাঁজার চালান র‍্যাবের অভিযানে আটক দুই

জাহাঙ্গীর আলম পলক
প্রকাশ: ২৩ জানুয়ারী ২০২৪

 গ্রেফতারকৃত মাদকব্যবসায়ী

রিপোর্ট- জাহাঙ্গীর আলম পলক,

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও এলাকায় অভিযান চালিয়ে মাছবাহী পিক আপ থেকে বিপুল পরিমাণ মাদকসহ দুই মাদককারবারিকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব।

সোমবার রাতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে অভিযান চালিয়ে মাছের আড়ালে বহন করা ১০০ কেজি গাঁজাসহ একটি পিকআপ জব্দ করা হয়।

আটককৃতদের থেকে উদ্ধার হওয়া গাঁজা

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- চক্রের মূলহোতা

মো. মহসিন (৪০) ও তার সহযোগী পিন্টু চন্দ্র সরকার (২৪)।

আজ মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর টিকাটুলিতে র‍্যাব-৩ এর সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ গনমাধ্যম কে এ তথ্য জানান।

সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ

তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও থানার মেঘনা এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে অস্থায়ী চেকপোস্ট বসিয়ে পিকআপে পানির ট্যাংকিতে অভিনব কায়দায় লুকিয়ে মাদক পরিবহনের দুই কারবারিকে ১০০ কেজি গাঁজাসহ গ্রেফতার করা হয়েছে। চক্রটি দীর্ঘদিন বিভিন্ন কৌশলে মাদক এনে স্থানীয় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের দিয়ে বিক্রি করত।

অধিনায়ক বলেন,এই চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে দেশের সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে মাদক এনে ঢাকায় এবং আশপাশের এলাকায় বিক্রি করতেন।

গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে অধিনায়ক বলেন, পিকআপে মাছ পরিবহনের জন্য ব্যবহৃত প্লাস্টিকের ড্রামের ভেতরে মাদক পরিবহন করে। পিক আপে মাছ থাকার তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করত। চেক পোস্টে তাদের গাড়ি থামালে তারা বলত, কুমিল্লার চান্দিনা থেকে মাছ লোড করে যাত্রাবাড়ী মাছের আড়তে যাচ্ছে। পিকআপে মাছের ড্রামে গাঁজা লুকিয়ে রাখায় তারা নিশ্চিত ছিল যে, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তল্লাশীতে মাদকের সন্ধান পাওয়া যাবে না। এভাবে তারা মাদক এনে কারবারিদের কাছে সরবরাহ করত। এরপর সেগুলো কিশোর গ্যাং সহ বিভিন্নভাবে বিক্রি করত।

মাদক পরিবহনে ব্যবহারকৃত গাড়ি

অধিনায়ক আরো বলেন, মাদক সিন্ডিকেটের মূলহোতা হলো মহসিন এবং তার অন্যতম সহযোগী পিন্টু। কুমিল্লা, নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকার আরও কয়েকজন মাদক কারবারী এই চক্রে জড়িত রয়েছে। তারা অল্প পরিশ্রমে অধিক অর্থ উপার্জনের লোভে মহসিনের পরিকল্পনায় মাদক সিন্ডিকেটটি গড়ে তোলে। তারা একেক সময় একেক ধরনের কৌশল অবলম্বন করত। তারা কখনও ভূয়া নাম পরিচয় ব্যবহার করে, কখনও মাইক্রোবাস/প্রাইভেট কারে যাত্রী পরিবহনের নামে কিংবা যাত্রীবাহী বাসযোগে এবং পণ্যবাহী ট্রাক, পিকআপ ও কাভার্ডভ্যানে করে মাদকের বড় চালান নিয়ে আসত।

গ্রেফতারকৃত মহসিন পারিবারিক টানাপোড়েনের কারণে পড়াশোনা না করে ছোটবেলা থেকে নিজ এলাকায় নছিমন গাড়ি চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করত। পরবর্তীতে সে পিকআপের হেলপারি শুরু করে। চার বছর পিকআপের হেলপারি করার পর সে নিজেই পিকআপ চালানো শুরু করে। এরপর থেকে সে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে পিকআপযোগে পণ্য পরিবহন করতো। এউ পেশার আড়ালে মাদক পরিবহন করত।

তার বিরুদ্ধে মাদক মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। ২০২২ সালের ৩ নভেম্বর রাজধানীর হাতিরঝিল থেকে মাদকসহ গ্রেফতার হয়। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে চাঁদপুর মডেল থানায় আরেকটি মাদক মামলা রয়েছে।

গ্রেফতারকৃত পিন্টুর পেশা মূলত কাঠমিস্ত্রি। মহসিন এবং পিন্টুর বাড়ি একই এলাকায় হওয়ায় মাদক সেবনের মাধ্যমে তাদের মাঝে সখ্যতা গড়ে উঠে। পরবর্তীতে মহসিনের দেখানো প্রলোভনে পিন্টুকে তার মাদক ব্যবসার সহযোগী মহসিনের সঙ্গে মাদকদ্রব্য পরিবহন ও কারবার করত। গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

মন্তব্য

পঠিতসর্বশেষ

এলাকার খবর

Developed By: Dotsilicon