ফয়সাল হোসেন, লক্ষ্মীপুরঃ
লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জে এক ব্যক্তিকে প্রকাশ্যে অপহরণ, মারধর এবং মোবাইল ফোন ও টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় চারজনকে গ্রেফতার করেছে চন্দ্রগঞ্জ থানা পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে চন্দ্রগঞ্জ থানার এএসআই আব্দুল খালেক।
রবিবার ( ১৩ জুলাই) বিকেলে চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের সামনের রাস্তায় এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পরদিন ১৪ জুলাই চন্দ্রগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন ভিকটিম শহিদুল ইসলাম। শহিদুল নোয়াখালি জেলার সুধারামপুর থানার নোয়াখালী পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের আরিফ মিয়া রাজ বাড়ির মৃত আব্দুল কাদেরের ছেলে।
স্থানীয়ভাবে জানাযায়, অপহরণকারীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ফেইক আইডি খুলে ভিকটিমের সাথে একটি সম্পর্ক গড়ে তুলে। পরে কৌশলে ভিকটিমকে দেখার করার কথা বলে চন্দ্রগঞ্জে নিয়ে আসে। ভিকটিম চন্দ্রগঞ্জে আসার পর আসামীরা তাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।
ভুক্তভোগী শহিদুল ইসলাম জানান, ‘আমি চন্দ্রগঞ্জে গেলে পূর্বপরিকল্পিতভাবে একদল দুর্বৃত্ত আমার গতিরোধ করে আমাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।’
মামলায এজাহার নামীয় ৫জন এবং অজ্ঞাতনাম ৮-১০জনকে আসামী করা হয়। অভিযুক্তরা হলেন—ওমর ফারুক (২৩), রুমান আহমেদ রতন (২২), সিফাত হোসেন (১৮), মো. অনিক (১৮) ও নজরুল ইসলাম (২৫)। ঘটনাস্থল থেকে প্রথম ৪জনকে গ্রেফতার করলেও নজরুল পালিয়ে যায়।
গ্রেফতারকৃত ওমর ফারুক চন্দ্রগঞ্জ থানাধীন লতিফপুর গ্রামের মান্নান মাওলানার বাড়ির মৃত কবির হোসেনের ছেলে, রুমান আহমেদ রতন পাঁচপাড়া গ্রামের জমাদ্দার বাড়ির বশির আহম্মদের ছেলে, মো. সিফাত হোসেন ভৈবরনগর গ্রামের মোস্তফা মিয়ার নতুন বাড়ির আলাউদ্দিন হোসেনের ছেলে, মো. অনিক পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা থানার পখিয়া গ্রামের মজনু মৃধার ছেলে (বর্তমানে সে লতিফপুরে শহীদের মুরগীর ফার্মে কাজ করত)।
অভিযোগে বলা হয়, তাকে অপহরণ করে চন্দ্রগঞ্জ পশ্চিম লতিফপুর এলাকার ধোপাঘাটা স্টীল ব্রীজের পূর্ব পার্শ্বে জনৈক সুজনের দোকানের পিছনে ভিকটিমকে আটক করিয়া রাখে। সেখানে তাকে মারধর করা হয় এবং তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন থেকে তার চাচা বেলায়েত উদ্দিনের কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। একই সঙ্গে ভিকটিমকে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়।
শহিদুল ইসলামের দাবি, তার কাছ থেকে জোরপূর্বক ২৫ হাজার টাকা ও একটি VIVO Y17S মডেলের স্মার্টফোন ছিনিয়ে পালিয়ে যায় ৫নং আসামী নজরুল।
সংবাদ পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে অভিযুক্তদের মধ্যে চারজন—ওমর ফারুক, রুমান আহমেদ রতন, সিফাত হোসেন ও মো. অনিককে গ্রেফতার করে। তবে নজরুল ইসলামসহ বাকি অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়।
এ বিষয়ে চন্দ্রগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফয়জুল আজীম জানান, ঘটনার পরপরই পুলিশ দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করে এবং চারজনকে গ্রেফতার করে। মামলা তদন্তাধীন রয়েছে এবং পলাতকদের আটকে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
মন্তব্য