সাইফুল ইসলাম: চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
আনন্দ, উচ্ছ্বাস আর গর্বের এক অপূর্ব সমন্বয়ে কর্ণফুলী আব্দুল জলিল চৌধুরী কলেজে ২৪ এপ্রিল -বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হলো বার্ষিক পুরস্কার বিতরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান-২০২৫। সকাল থেকে শুরু হওয়া দিনব্যাপী এই আয়োজনে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ, অতিথিদের প্রাণবন্ত উপস্থিতি এবং মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক পরিবেশনা কলেজ প্রাঙ্গণকে এক উৎসবমুখর পরিবেশে রূপ দেয়।
বর্ণাঢ্য আয়োজনে সূচনা হয় পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত ও গীতা পাঠের মধ্য দিয়ে। এরপর জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে শুরু হয় মূল অনুষ্ঠান। শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের সময় পুরো প্রাঙ্গণে এক আবেগঘন পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
উক্ত অনুষ্ঠানে কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ জসীম উদ্দীনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কর্ণফুলী উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (চলতি দায়িত্ব) রয়া ত্রিপুরা।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কলেজ গভর্নিং বডির সদস্য এডভোকেট এস. এম. ফোরকান। অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন:উপাধ্যক্ষ সমীর রঞ্জন নাথ, শিক্ষক প্রতিনিধি
অধ্যাপক শামীম আক্তার চৌধুরী, শিক্ষক পরিষদ সম্পাদক অধ্যাপক এইচ. এম. আবু ওবায়দা, ক্রীড়া উপ-কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক আবদুল জলিল, বিতর্ক উপ-কমিটির আহ্বায়কঅধ্যাপক এরশাদুল ইসলাম, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক উপ-কমিটির আহ্বায়ক
অধ্যাপক আশরাফ আলী,অ ধ্যাপক তাজনীন ফেরদৌস,অধ্যাপক নাজমা বেগম,অধ্যাপক আবদুল কাইয়ুম।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কলেজের সম্মানিত শিক্ষকমন্ডলী ও কর্মচারীবৃন্দ।
মূল পর্বে একে একে পুরস্কৃত করা হয় কলেজের শ্রেষ্ঠ শিক্ষার্থী, কৃতি ক্রীড়াবিদ, বিতার্কিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিভাধরদের। শৃঙ্খলা, নিয়মিত উপস্থিতি, লেখাপড়ায় কৃতিত্ব, খেলাধুলা, বিতর্ক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে বিশেষ অবদানের জন্য শিক্ষার্থীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন অতিথিবৃন্দ।
প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে বলেন, “এই ধরনের আয়োজন শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করে। তরুণ প্রজন্মকে শুধু পাঠ্যপুস্তকের গণ্ডিতে সীমাবদ্ধ না রেখে তাদের প্রতিভা বিকাশের সুযোগ করে দেওয়াই আজকের শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য হওয়া উচিত।”
বিশেষ অতিথি তাঁর বক্তব্য বলেন,আজকে ডিটিটাল যুগে ডিভাইস ব্যবহারে সতর্ক থেকে বেশিরভাগ সময় পড়ালেখায় মনোনিবেশ করতে হবে যাতে ভবিষ্যত দূর্নীতিমুক্ত জাতি গঠনে ভুমিকা রাখতে পার।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যক্ষ মোহাম্মদ জসীম উদ্দীন বলেন,“এই কলেজ শুধু শিক্ষার কেন্দ্র নয়, এটি একটি সাংস্কৃতিক ও মানবিক বিকাশেরও কেন্দ্র। আমরা চাই, আমাদের শিক্ষার্থীরা একাডেমিক সফলতার পাশাপাশি মানবিক, সৃজনশীল ও নৈতিক গুণাবলিতে গড়ে উঠুক।”
পুরস্কার বিতরণ শেষে শুরু হয় বর্ণিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় দেশাত্মবোধক গান, নৃত্য, আবৃত্তি ও নাটিকা শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রবল উৎসাহ ও উচ্ছ্বাস সৃষ্টি করে। এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সমাপ্তি হয় কলেজের এই গুরুত্বপূর্ণ আয়োজন।
প্রতিবছরের মতো এবারও কর্ণফুলী আব্দুল জলিল চৌধুরী কলেজ তার ঐতিহ্য ও গৌরবকে আরও সমৃদ্ধ করল। শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ, শিক্ষক ও পরিচালনা পর্ষদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এই আয়োজন হয়ে উঠেছে অনন্য ও স্মরণীয়।
মন্তব্য