শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫
 

জাবি ছাত্রদলের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অদক্ষ নেতৃত্বের অভিযোগ : কমিটি বিলুপ্তি সহ ৫ দফা দাবি

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২৫ এপ্রিল ২০২৫

---


জাবি প্রতিনিধি


দুর্নীতি, ছাত্রলীগ পুনর্বাসন, দলীয় নেতাকর্মীদের অবমূল্যায়ন, অনৈতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন, অদক্ষ নেতৃত্ব,কেন্দ্রের সাথে সমন্বয়হীনতা, সাংগঠনিক ব্যর্থতাসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগ এনে জাবি শাখা ছাত্রদলের কমিটি বিলুপ্তির দাবি জানিয়েছেন ছাত্রদলেরই একাংশের নেতাকর্মীবৃন্দ।


২৪ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) রাত সোয়া ১০ বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় জাবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির ৬ নং সদস্য সাদিকুর রহমান সঞ্চালিত এক সংবাদ সম্মেলনে আহ্বায়ক কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক রাশেদ আল হোসাইন বাদল এসব দাবি তুলে ধরেন। এসময় তারা কার্যকর এবং স্বচ্ছ নতুন কমিটি গঠনের পাশাপাশি ৫ টি দাবি জানান। এছাড়া সংবাদ সম্মেলন শেষে একটি মিছিল নিয়ে তারা শহীদ সালাম বরকত হল পর্যন্ত গিয়ে শেষ করেন।


এসময় তারা, ‘জিয়ার সৈনিক এক হও লড়াই করো’ ‘জবাব চাই জবাব চাই, বাবর-অনিক জবাব চাই’ ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট একশন’ ইত্যাদি স্লোগান দেয়।


ছাত্রদল নেতাকর্মীদের দাবিগুলো- অবিলম্বে শাখা ছাত্রদলের বর্তমান কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করতে হবে, দলীয় আদর্শ, সাংগঠনিক দক্ষতা ও নৈতিক মূল্যবোধসম্পন্ন নেতৃত্ব দিয়ে নতুন কমিটি গঠন করতে হবে, ভ্যাকসিনেশন কর্মসূচির অর্থ কেলেঙ্কারির তদন্ত করে দোষীদের সাংগঠনিকভাবে বহিষ্কার করতে হবে, কমিটির সকল সদস্যদের যাচাই-বাছাই করে ছাত্রদলের আদর্শবিরোধী কোনো ব্যক্তি যাতে না থাকতে পারে তা নিশ্চিত করতে হবে এবং ছাত্রদলের ভাবমূর্তি রক্ষার্থে প্রয়োজনীয় সংস্কার প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু করতে হবে।


সংবাদ সম্মেলনে একটি লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, বর্তমান জাবি ছাত্রদলের কমিটির একাধিক নেতার অনৈতিক, দুর্নীতিগ্রস্ত ও নিয়মবহির্ভূত কর্মকাণ্ড আমাদের সংগঠনের আদর্শ ও নীতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। এ প্রেক্ষিতে আমরা জোরালোভাবে দাবি জানাচ্ছি এই ব্যর্থ ও বিতর্কিত কমিটির তাৎক্ষণিক বিলুপ্তি ও একটি যোগ্য, কার্যকর এবং স্বচ্ছ নতুন কমিটি গঠনের।


সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বর্তমান কমিটির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো হলো- সংগঠনের নাম ব্যবহার করে হেপাটাইটিস বি ভ্যাক্সিনেশন প্রোগ্রামের আড়ালে আওয়ামী ঘরানার এক সাবেক এমপি থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ গ্রহণ করা হয়েছে, যার কোনো কেন্দ্রীয় অনুমোদন ছিল না। প্রায় ৩ কোটি ২০ লাখ টাকার বাজেট থেকে ১ কোটি ৮৫ লাখ টাকা উদ্বৃত্ত রেখে নেতৃবৃন্দের মধ্যে ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে সংঘাত তৈরি হয়েছে। যা শুধু দুর্নীতিই নয়, বরং ছাত্রদলের ভাবমূর্তি ধ্বংসের চক্রান্ত।


বর্তমান নেতৃত্বকে অসামঞ্জস্যপূর্ণ ও অদক্ষ উল্লেখ করে বলা হয়, ১৭৭ সদস্যের কমিটিতে ১৩ জনের ছাত্রলীগ সংশ্লিষ্টতা স্পষ্ট, যা দলীয় আদর্শের পরিপন্থি। এছাড়া এখন পর্যন্ত সকল সদস্যের পরিচিতি সভা, আলোচনা বা সংহতির কোনো প্রোগ্রাম আয়োজন করতে বার্থ হয়েছে কমিটি।


সাংগঠনিক অকার্যকারিতার অভিযোগ তুলে বলা হয়, কেন্দ্রীয় নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও ৯০ দিন অতিক্রম করে ফেললেও কাউন্সিল বা পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার কোনো উদ্যোগ নেয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে এখনো অনেক সদস্যকে যুক্ত করা হয়নি বরং কমিটির বাইরের নিজেদের অনুসারীদের যুক্ত করে বাকিদের মতপ্রকাশের সুযোগ রুদ্ধ করেছে।


এছাড়া সমন্বয়হীনতা ও দায়িত্ব এড়ানোর প্রবণতার অভিযোগ এনে বলা হয়, কেন্দ্রীয় ছাত্রদল কিংবা ছাত্রবিষয়ক সম্পাদকের অনুমোদন ছাড়াই একাধিক সাংগঠনিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, পরে তা কেন্দ্রের ওপর চাপিয়ে দিয়ে দায়মুক্তি চাওয়া হয়েছে।


এছাড়া বিজ্ঞপ্তিতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক জনাব রকিবুল ইসলাম বকুল, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসিরের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলা হয়, এই বিশৃঙ্খলা নিরসনে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কার্যকর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করুন। জাবি ছাত্রদলের প্রকৃত কর্মী হিসেবে আমরা কোন দুর্নীতিবাজ নেতৃত্বকে স্বীকৃতি দিতে পারি না। সময় এসেছে জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার। প্রয়োজনে আমরা আন্দোলনমুখী কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হবো।

 

মন্তব্য

সর্বশেষপঠিত

এলাকার খবর

Developed By: Dotsilicon