মোঃ শাকিল মোল্লা, রাজবাড়ী জেলা প্রতিনিধি:
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রায়হানুল হায়দারের বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের সাথে খারাপ আচরন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
নির্ধারিত মূল্য থেকে বেশি দামে সার বিক্রির অভিযোগ সংক্রান্ত বিষয়ে কৃষি কর্মকর্তার বক্তব্য জানার জন্য তার কার্যালয়ে গেলে তথ্য সহায়তা না করে চ্যানেল এস টেলিভিশন ও দৈনিক আমার সংবাদ পত্রিকার গোয়ালন্দ উপজেলা প্রতিনিধি মোঃ জাহিদুল ইসলাম শেখ এবং আমার দেশ পত্রিকার গোয়ালন্দ উপজেলা প্রতিনিধি জহুরুল ইসলাম হালিমের সাথে তিনি এ অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন।
২১ অক্টোবর মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে উপজেলা কৃষি অফিসারের কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
এ বিষয়ে সাংবাদিক জাহিদুল ইসলাম শেখ বলেন, এ বছর ডিএপি সারের সরকার ঘোষিত নির্ধারিত মূল্য ২১ টাকা। কিন্তু এই সার খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ২৯ টাকা কেজি দরে। বিষয়টি জানতে পেরে আমি মাঠপর্যায় কৃষকদের সাথে কথা বলে ঘটনার সত্যতা পাই এবং খুচরা ডিলার ও বিসিআইসি ডিলারদের বক্তব্য নেই। পরিশেষে মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে উপজেলা কৃষি অফিসারের কার্যালয়ে যাই তার বক্তব্য জানতে। কিন্তু তিনি আমাকে তথ্য না দিয়ে উল্টো আমার উপর ক্ষিপ্ত হন এবং বিভিন্ন অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। পরে আমি সেখান থেকে চলে আসি।
সাংবাদিক জহুরুল ইসলাম হালিম জানান, সংবাদ সংক্রান্ত কাজে মঙ্গলবার দুপুরে আমি তার কার্যালয়ে যাই। এ সময় আমি তাকে সালাম দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করি এবং ভাই বলে সম্বোধন করি। এতে তিনি আমার উপর ক্ষেপে যান। বলেন, আপনারা ইউএনও -এসিল্যান্ডের কার্যালয়ে গিয়ে যে আচরন করেন, আমার কার্যালয়ে এসে তেমন আচরন করেন না। তারা যেমন বিসিএস ক্যাডার, আমিও তেমন বিসিএস ক্যাডার”। পরে এ নিয়ে তার সাথে আমার অনেক কথা কাটাকাটির পর কক্ষ হতে বের হয়ে আসি।
দৈনিক মাতৃকন্ঠের প্রতিনিধি মইনুল হক মৃধা ও দৈনিক আমাদের রাজবাড়ী প্রতিনিধি সাজ্জাদ হোসেন বলেন, কয়েকদিন আগে ধান বীজ সংক্রান্ত বিষয়ে কৃষি কর্মকর্তার বক্তব্য জানতে তার কার্যালয়ে যাই। কিন্তু তিনি কোন বক্তব্য দেননি। সামান্যতম সৌজন্যমূলক আচরনও করেননি। পরে তার বক্তব্য ছাড়াই আমরা সংবাদ প্রকাশ করি।
চ্যানেল ২৪ এর রাজবাড়ী জেলা প্রতিনিধি সুমন বিশ্বাস জানান, আমি ১ মাস আগে তথ্য অধিকার আইনে কিছু তথ্যের জন্য তার সরকারি ও ব্যাক্তিগত মেইলে আবেদন করি। কিন্তু তিনি আমাকে তথ্য না দিয়ে উল্টাপাল্টা কথা বলেন। তথ্য দিয়ে কি করব সে বিষয়ে কৈফিয়ত চান। একজন সরকারি কর্মকর্তার এ ধরনের আচরন খুবই দুঃখজনক।
এ বিষয়ে গোয়ালন্দ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৈয়দ রায়হানুল হায়দার মুঠোফোনে এ প্রতিনিধিকে জানান, মঙ্গলবার দুপুরের ঘটনার জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। ওইদিন আমার শরীর ও মন ভালো ছিল না।কাজেরও প্রচুর চাপ ছিল। তাই নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছিলাম। এ ধরনের ঘটনা আগামীতে আর ঘটবে না। সাংবাদিকদের সাথে মিলেমিশে এলাকার কৃষি ও কৃষকদের উন্নয়নে কাজ করব।
এই প্রসঙ্গে উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশন কমিশনার মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, সাংবাদিকদের সাথে কৃষি কর্মকর্তার অসৌজন্যমূলক আচরণের কথা জানতে পেরে বুধবার সকালে তাকে আমার কার্যালয়ে ডেকেছিলাম। তিনি ঘটনার জন্য আমার কাছে লজ্জিত ও অনুতপ্ত হয়েছেন। আমি তাকে সতর্ক করে দিয়েছি। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা ঘটলে তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়া বাড়তি দামে সার বিক্রির অভিযোগটির বিষয়ে দ্রুত তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মন্তব্য