সাইফুল ইসলাম, চট্রগ্রাম দক্ষিণ জেলা প্রতিনিধি
আজ ২৪ জুলাই, চট্টগ্রামের খ্যাতিমান শিক্ষাবিদ ও পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আবুল কাশেমের ৩০তম মৃত্যুবার্ষিকী। শিক্ষা ও প্রশাসনিক দায়িত্বে তার নিষ্ঠা, মেধা এবং নেতৃত্ব আজও চট্টগ্রামের শিক্ষা অঙ্গনে শ্রদ্ধাভরে স্মরণীয়।
মোহাম্মদ আবুল কাশেম ১৯৩০ সালের ১ জানুয়ারি চট্টগ্রাম জেলার বোয়ালখালী উপজেলার আহলা সাধার পাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশব থেকেই তিনি শিক্ষায় আগ্রহী ছিলেন। দীর্ঘ শিক্ষাজীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক ছিল ১৯৬৮ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম.এ. ডিগ্রি অর্জন করা, যেখানে তিনি প্রথম ব্যাচের ছাত্র হিসেবে উত্তীর্ণ হন।
তার পেশাগত জীবন শুরু হয় ১৯৪৭ সালে, বোয়ালখালীর পি সি সেন সারোয়াতলী উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে। কর্মদক্ষতা ও নিষ্ঠার কারণে তিনি অল্প সময়েই সহকারী প্রধান শিক্ষক এবং পরবর্তীতে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পান। এই বিদ্যালয়ে তিনি একটানা ২৬ বছর শিক্ষকতা করেন, যা তাঁর প্রতি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষার্থীদের আস্থা ও ভালোবাসার প্রমাণ বহন করে।
পরবর্তীতে, ১৯৭৩ সালে তিনি রাউজান উপজেলার নোয়াপাড়া কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন। তাঁর দক্ষ নেতৃত্ব এবং শৃঙ্খলাপূর্ণ পরিচালনায় কলেজটি শিক্ষার্থীদের মাঝে নতুন আলো ছড়াতে শুরু করে।
এরপর ১৯৭৬ সালের নভেম্বরে তিনি পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৯২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত তিনি এই দায়িত্ব পালন করেন। শিক্ষার্থীদের নৈতিক শিক্ষা, শৃঙ্খলা ও মানবিক গুণাবলি গঠনে তিনি ছিলেন নিবেদিতপ্রাণ। ১৯৯৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত তিনি একই প্রতিষ্ঠানে রেক্টর হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
মোহাম্মদ আবুল কাশেমের শিক্ষা ও মূল্যবোধের বীজ ছড়িয়ে পড়েছিল অসংখ্য শিক্ষার্থীর মাঝে। তাঁর হাতে গড়া প্রজন্ম আজ দেশের বিভিন্ন স্থানে দায়িত্বশীল পদে অধিষ্ঠিত। শিক্ষা জগতে তাঁর অবদান স্মরণ করে অনেকে বলেন, “তিনি ছিলেন আদর্শ শিক্ষকের প্রতীক”।
দীর্ঘ কর্মময় জীবনের শেষপ্রান্তে ১৯৯৫ সালের ২৪ জুলাই চট্টগ্রাম মেডিকেল সেন্টার হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুর এত বছর পরেও তিনি স্মরণীয় হয়ে আছেন শিক্ষার্থীদের হৃদয়ে, সহকর্মীদের শ্রদ্ধায় এবং সমাজের সার্বিক মূল্যায়নে।
মন্তব্য