বুধবার, ৭ মে ২০২৫
 

কৃষি ডিপ্লোমাধারীদের দাবির বিরুদ্ধে বাকৃবিতে বিক্ষোভ

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ৬ মে ২০২৫

 

---


সুমন গাজী, বাকৃবি প্রতিনিধি:


বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) কৃষিবিদদের পেশাগত বৈষম্য দূরীকরণ ও অধিকার নিশ্চিতের দাবিতে ৬ দফা দাবি উপস্থাপন করে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন কৃষি অনুষদের শিক্ষার্থীরা।


মঙ্গলবার (৬ মে) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় কৃষি অনুষদ ছাত্র সমিতির সামনে থেকে ‘কৃষিবিদ ঐক্য পরিষদ’-এর ব্যানারে মিছিলটি বের হয়। কেআর মার্কেট ঘুরে মিছিলটি উপাচার্যের বাসভবনের সামনে এসে অবস্থান নেয় এবং সেখানে দুই শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নিয়ে সমাবেশ করেন।


সমাবেশে শিক্ষার্থীরা ছয় দফা দাবি উত্থাপন করেন। দাবিগুলো হলো- কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই), বিএডিসি ও অন্যান্য গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ১০ম গ্রেডের (উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা/উপসহকারী বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা/সমমান) পদগুলো শুধুমাত্র স্নাতক ডিগ্রিধারী কৃষিবিদদের জন্য উন্মুক্ত করা; ডিএই ও অন্যান্য কৃষি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে নবম গ্রেডসহ অন্যান্য গ্রেডে নিয়মিত পদোন্নতি ও পদবৃদ্ধির নিশ্চয়তা; নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হয়ে কোটা ব্যবস্থায় বিএডিসিতে নবম গ্রেডে পদোন্নতির সুযোগ বাতিল; ১০ম গ্রেডের পদগুলোকে গেজেটের আওতার বাইরে রেখে স্বতন্ত্র পদসোপান কাঠামোয় অন্তর্ভুক্ত করা; কৃষি ডিপ্লোমাধারীদের জন্য নতুন কোনো বিশেষায়িত কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন না করে তাদেরকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অধীনেই সীমাবদ্ধ রাখা; এবং শুধুমাত্র স্নাতক ডিগ্রিধারী কৃষিবিদদের ‘কৃষিবিদ’ উপাধি ব্যবহারের বৈধতা দেওয়া।


আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, ‘সম্প্রতি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ১৭৪ জন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাকে সহকারী কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে। তারা এ পদায়নকে বিএসসি কৃষিবিদদের প্রতি বৈষম্যমূলক ও হতাশাজনক বলে উল্লেখ করেন। আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে এই পদায়ন বাতিল না হলে দেশের সব কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সম্মিলিতভাবে তীব্র আন্দোলনে যাবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তারা।’


সমাবেশে কৃষি অনুষদের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘ডিপ্লোমাধারীদের অন্যায়ভাবে তাদের প্রভাব বাড়ানোর চেষ্টা করছে। তারা কৃষি সেক্টর নিজেদের আয়ত্তে নিতে চায়। কিন্তু আমরা কৃষিবিদরা দেশের সেবা করার জন্যই পড়াশোনা করছি, কেউ আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।


আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘দেশের জনসংখ্যা যখন ৭ কোটি ছিল তখন দেশের মানুষ না খেয়ে মারা যেতো। এখন জনসংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ২০ কোটি এবং এরপরও দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। এর পুরোটা কৃতিত্বই আমাদের কৃষিবিদদের। একারণেই একজন কৃষিবিদকে গড়ে তুলতে সরকার প্রায় ১৪ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা খরচ করে। দেশের কৃষি উন্নয়নে যারের এত ভূমিকা তাদের মর্যাদা নিশ্চিত না করা হলে আমরা কিছুতেই ছাড় দেবো না। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে। প্রজ্ঞাপন জারি করে আমাদের সঙ্গে তামাশা করলে তার জবাব রাজপথেই দেওয়া হবে।’


আন্দোলনকারীরা আরও জানান, ‘আজ দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ. কে. ফজলুল হক ভূঁইয়া এবং ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। আগামীকাল (বুধবার) কৃষি উপদেষ্টার সাথে তাদের প্রতিনিধি দলের আলোচনা করার কথা আছে। আলোচনার ফলাফল সন্তোষজনক না হলে সারা বাংলার কৃষিবিদ একজোট হয়ে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।’


প্রসঙ্গত, এর আগে আজ (মঙ্গলবার) সকাল সাড়ে দশটায় একই দাবিতে কৃষি অনুষদ ছাত্র সমিতির কার্যালয়ের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। এক পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ আব্দুল জব্বার মোড় সংলগ্ন রেললাইন অবরোধ করেন।

মন্তব্য

সর্বশেষপঠিত

এলাকার খবর

Developed By: Dotsilicon