আশিকুর রহমান, জবি প্রতিনিধি
রাষ্ট্র যখন গুনাহ(পাপ) করে, তখন রক্ত দিয়ে লড়াই করে ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করতে হয় বলে মন্তব্য করেন এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। তিনি আরও বলেন,দাঁড়িপাল্লা ইনসাফের প্রতীক। ভারসাম্যের প্রতীক। ইনসাফ যদি তোমার নিজের বিরুদ্ধেও যায় তবুও ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করো।
আজ মঙ্গলবার( ২২ এপ্রিল) জাস্টিস ফর জুলাই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা কর্তৃক আয়োজিত ‘বিচারহীনতার সংস্কৃতি ও আমাদের করনীয়’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ মন্তব্য করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের পোগোজ স্কুল অডিটোরিয়ামে সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
ফুয়াদ বলেন, প্রতিটি মানুষের ভেতরে ইনসাফের বীজ নিহীত আছে। একজন মূর্খ মানুষের মধ্যেও ইনসাফের ধারণা আছে।
ইনসাফ যদি কায়েম না হয় তবে সেখানে সুনামি হয়, চিন্তার সুনামি, লড়াইয়ের সুনামি হয়। রক্ত দিয়ে ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করতে হয়। ২৪ এর লড়াইও সেই আকাঙ্ক্ষা থেকে হয়েছে।
ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার প্রসঙ্গে ফুয়াদ বলেন, বিচারহীনতা সংস্কৃতি ও এর বয়ান ভেঙে ন্যায় বিচার প্রতিষ্টা করতে ঐতিহাসিক লড়াই করতে হবে। আমাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হেজেমনি, ইন্ডিয়ান হেজেমনি ভেঙ্গে দিতে হবে।
বিচারের সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা করতে শুধু ২৪ এর বিচার চাইলে হবে না, দশকের পর দশকের চলা মামলার বিচারও চাইতে হবে, কৃষক মজুরের জমির মামালার বিচারও চাইতে হবে। আমার কৃষক শ্রমিক দিনমজুর যখন রাষ্ট্রের কাছে তার প্রাপ্য বিচার বাপে তখনই ইনসাফ প্রতিষ্ঠা হবে।
ফ্যাসিবাদের দোসরদের বিচার প্রসঙ্গে ফুয়াদ বলেন, ঘুম থেকে উঠে হাসিনাকে দেখতে হয় না, এর চাইতে বড় শান্তি আর কী আছে।
অন্তর্বত্নীকালীন সরকারের প্রত্যাশা অনেক তাদের অনেক চ্যালেন্জ রয়েছে। ১০ মাস অতিবাহিত হবার পরও ফয়াসিবাদের বিচার না হওয়া একটা প্রপাগান্ডার টুল হবে সরকারকে নারবাস করে দেয়ার জন্য। এবং আ’লীগ ব্যবহার করবে এই সরকারকে বিব্রত করার জন্য। বিচারহীনতার সংস্কৃতির পাশাপাশি বিচারের কাঠামো তৈরির আলাপ তুলতে হবে।
সেমিনারে বক্তারা বলেন বিচারহীনতার সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠিত একটি সংস্কৃতি। এর কাউন্টার সংস্কৃতি আমাদের তৈরি করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রইছ উদ্দীন বলেন, গ্রাম থেকে শহর রাজধানী থেকে জেলা প্রতিটি স্তরে বিচারহীনতার সংস্কৃতিতে সয়লাভ ছিলো। গ্রাম পর্যায়ে মানুষের আহাজারি শোনা যেত, প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিচার চাইতো। এ থেকে বোঝা যায় বিচার এক ব্যক্তির হাতে কুক্ষিগত। আর এই বিচারহীনতার সংস্কৃতি আমরা ধারন করে চলছি। করান বিপ্লবের ১০ মাসেও আমরা ফ্যাসিবাদী দোসরদের বিচারের মুখোমুখি করতে পারিনি। জাতীয় স্বার্থে, নিরাপত্তার আমাদের ন্যায় বিচারের সংস্কৃতি তৈরি করতে হবে। ফ্যাসিবাদী দোসরদের বিচার করতে হবে। সমাজের সর্বস্তরে ন্যায় বিচারের সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
জাস্টিস ফর জুলাই জবি শাখার সদস্য সচিব মেহেদী হাসানের সঞ্চালনায় কুরআন থেকে তেলওয়াতের মাধ্যমে সেমিনার শুরু হয় এবং ‘মুক্তিরও মন্দিরও সোপানতলে’ অনুপ্রেরণামূলক গান পরিবেশনের পর বক্তারা আলোচনা করেন। আলোচনা সভায় ক্যাম্পাসের বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য