স্টাফ রিপোর্টার
স্বৈরাচারী আওয়ামী সরকারের পতনের পরও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা সক্রিয় রয়েছে। বিশেষ করে বিআইডব্লিউটিএর ড্রেজিং বিভাগে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. সাইদুর রহমানের নেতৃত্বে গড়ে উঠেছে শক্তিশালী সিন্ডিকেট। দীর্ঘ ১২ বছর একই পদে বহাল থেকে তিনি কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। সরকারি বিধি অনুযায়ী একই স্থানে ৩ বছরের বেশি থাকার নিয়ম না থাকলেও রাজনৈতিক প্রভাব ও ঊর্ধ্বতন কর্তাদের সহযোগিতায় তিনি বহাল ছিলেন।
অভিযোগ আছে, সাইদুর রহমান ভুয়া সার্টিফিকেট ও তথ্য গোপন করে চাকরিতে প্রবেশ করেন। এলজিইডি থেকে দুর্নীতির অভিযোগে বরখাস্ত হওয়ার পর ২০০৩ সালে আবার বিআইডব্লিউটিএতে যোগ দেন। তার বিরুদ্ধে ড্রেজিং প্রকল্পে টেন্ডার ও বদলি বাণিজ্যের মাধ্যমে শত শত কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আছে। দুদকের মামলাগুলোও ধামাচাপা পড়ে আছে ঘুষ ও প্রভাব খাটানোর কারণে।
বিশেষ করে নেত্রকোণার ভোগাই ও কংস নদ খনন প্রকল্পে ১৩৪ কোটি টাকার আত্মসাতের অভিযোগে অনুসন্ধান চলছে। ঠিকাদাররা বিল উঠালেও বাস্তবে নদী খনন হয়নি। বরং আগের চেয়ে বেশি ভরাট হয়ে গেছে নদীর পেট। এ অর্থ ভাগাভাগি হয়েছে ঠিকাদার, প্রকৌশলী ও রাজনৈতিক মহলের মধ্যে। দুদকের মাঠ পর্যায়ের অনুসন্ধানে এসব তথ্যের সত্যতা মেলেছে, তবে মামলাগুলো এখনো গড়িমসিতে ঝুলে আছে।
সাইদুর ও তার স্ত্রীর নামে-বেনামে বিপুল সম্পদ গড়ে উঠেছে—বাড়ি, ফ্ল্যাট, মার্কেট ও গাড়ি। সম্পদ বিবরণীতে জীবিত বাবাকে মৃত দেখিয়ে উত্তরাধিকার সূত্রে সম্পদের মালিক দাবি করার মতো জালিয়াতির তথ্যও পাওয়া গেছে। কর্মকর্তারা বলছেন, দুদকের কিছু অসাধু সদস্য তাদের বাঁচাতে ইচ্ছাকৃত ধীরগতিতে কাজ করছেন।
অভিযোগ রয়েছে, সাইদুর রহমান বিআইডব্লিউটিএ অফিসার্স ক্লাবের বিনা ভোটের সভাপতি, অধীনস্থ প্রকৌশলীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে সিন্ডিকেট চালাচ্ছেন। ভুক্তভোগীরা বলছেন, এ সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে ড্রেজিং বিভাগ কখনো দুর্নীতিমুক্ত হবে না।
মন্তব্য