মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
 

খেলোয়াড় কোটায় ভর্তি, কিন্তু তিনি খেলোয়াড় নন

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২৬ আগস্ট ২০২৫

---

জাবি প্রতিনিধি

ক্রীড়াক্ষেত্রে এগিয়ে থাকা শিক্ষার্থীদের খেলোয়াড় কোটায় ভর্তির সুযোগ দিয়ে থাকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) কর্তৃপক্ষ। এক্ষেত্রে বিকেএসপি এবং জাতীয় দলের খেলোয়াড় এমন শিক্ষার্থীদের আবেদনের নিয়ম রয়েছে। কিন্তু এ নিয়ম মানেননি এক শিক্ষার্থী।

অভিযুক্ত মেহেদী হাসান ইমন বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের ৪৯তম ব্যাচের (২০১৯-২০ সেশন) শিক্ষার্থী। এছাড়া তিনি শাখা ছাত্রদলের আহবায়ক কমিটির সদস্য। মেহেদী ২০১৯-২০ সেশনে খেলোয়াড় কোটায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলেন।

জানা যায়, মেহেদী ভোলা সরকারি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক এবং একই জেলার উত্তর সাকুচিয়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পাশ করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে খেলোয়াড় কোটায় ভর্তি হলেও, ভর্তির পরে তিনি কোনো খেলাধুলার সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা শাখা জানায়, কোনো শিক্ষার্থী খেলোয়াড় কোটায় ভর্তি হতে হলে তাকে বিকেএসপি এবং জাতীয় দলের খেলোয়াড় হতে হবে এমনটা বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ থাকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিতে শুধু অনুমোদিত খেলাগুলোর ক্ষেত্রে তারা ভর্তি হতে পারবেন। অর্থাৎ এ কোটায় ভর্তিচ্ছুদের নির্দিষ্ট খেলায় পারদর্শিতা থাকতে হবে এবং সেই খেলা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিতে অনুমোদিত হতে হবে।

তবে মেহেদী হাসান ঠিক কোন খেলায় পারদর্শীতার সনদ দেখিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছেন তার তথ্য নেই শিক্ষা শাখার কাছে। এ তথ্য কোথায় থাকতে পারে জানতে চাইলে শারীরিক শিক্ষা বিভাগের কথা জানায় উক্ত অফিসের কর্মকর্তারা। এছাড়া ২০১৯-২০ সেশনে বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট ১১ জন খেলোয়াড় কোটায় ভর্তি হয়েছেন বলে জানান শিক্ষা শাখার কর্মকর্তারা।

অপরদিকে শারীরিক শিক্ষা বিভাগে গিয়ে ২০১৯-২০ সেশনে খেলোয়াড় কোটায় ভর্তি হওয়া ৯ জনের তথ্য পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে টেবিল টেনিসে ১জন, হকি ও ফুটবলে ১ জন, ফুটবলে ১ জন, ক্রিকেটে ২ জন, হ্যান্ডবল ও বাস্কেটবলে ১জন, হ্যান্ডবলে ২ জন এবং বাস্কেটবলে ১জন। তবে মেহেদী হাসানের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি সেখানে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মানুযায়ী, খেলোয়াড় কোটায় ভর্তির পর প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে একশো টাকার তিনটি স্ট্যাম্পে নিয়মিত খেলাধুলা চালিয়ে নিবে এমন অঙ্গীকার নামা প্রদান করতে হয়। তবে শারীরিক শিক্ষা বিভাগে গিয়ে মেহেদীর প্রদান করা এমন কোনো অঙ্গীকার নামা পাওয়া যায়নি।

 

এ বিষয়ে জানতে মেহেদী হাসানের সাথে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি সাড়া দেননি। তবে তিনি অন্য এক গণমাধ্যমে তিনি বলেন, আমি ক্রিকেটার কোটায় বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হই। আবাহনীতে ক্রিকেটার হিসেবে ছিলাম। ওখানে ২০১৮ সালের মাঝামাঝি থেকে ১৯ সালের বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হওয়ার আগ পর্যন্ত আমি ক্রিকেট খেলতাম। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর পড়াশোনা চাপে আর খেলাধুলা চালিয়ে যেতে পারিনি।

 

তবে একই ব্যাচে খেলোয়ার কোটায় ভর্তি হওয়া বিকেএসপির এক শিক্ষার্থী (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) বলেন, আমাদের সাথে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে মাত্র কয়েকজনই খেলাধুলার সাথে সম্পৃক্ত আছি। বাকিদের সাথে পরিচয় হয়নি। আসলে আমাদের এই সেকশনে ভর্তি হওয়ার প্রক্রিয়ায় নানা ধরনের জটিলতা রয়েছে। সাবেক ভিসি ফারজানা আমলে নানা অনিয়মের মাধ্যমে ভর্তি করিয়ে পরিবেশ নষ্ট করেছে।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা শাখার ডেপুটি রেজিস্ট্রার সৈয়দ মোহাম্মদ আলী রেজা বলেন, ২০১৯-২০ সেশন থেকে ফুটবল, ক্রিকেটে খেলোয়াড় কোটায় ভর্তির সুযোগ শুধু বিকেএসপি এবং ন্যাশনাল টিমের জন্য করা হয়।

 

শারীরিক শিক্ষা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক বেগম নাছরীন জানান, খেলোয়াড় কোটায় সাধারণত বিকেএসপি এবং জাতীয় টিম অথবা ন্যাশনাল স্কোয়াডের খেলোয়ারদের ভর্তি করানো হয়। এর বাইরে ভর্তি হওয়ার সুযোগ একেবারেই নেই।

মন্তব্য

সর্বশেষপঠিত

এলাকার খবর

Developed By: Dotsilicon