রাবি প্রতিনিধি
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) গত ২ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে পোষ্য কোটা বাতিল করে প্রশাসন। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক বৈঠকে সেদিন বিষয়টি নিশ্চিত করেন উপাচার্য সালেহ হাসান নকীব। এরপর ২৬ জানুয়ারি ভর্তি কমিটি ও ভর্তি উপকমিটির সভায় চূড়ান্তভাবে পোষ্য কোটা বাতিল করা হয়।
কিন্তু গত বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) আবারও পোষ্য কোটার দাবিতে অবস্থান ধর্মঘট ও কর্মবিরতি পালন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক,কর্মকর্তা, কর্মচারীরা। প্রশ্ন হচ্ছে কোটা বাতিলের দীর্ঘ ৬ মাস পর আবারও কেন আন্দোলন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসার্স সমিতির সভাপতি মোক্তার হোসেন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের মৌখিকভাবে আশ্বাস দেয়। সেই আশায় আশ্বস্ত হয়ে এতদিন অপেক্ষা করেছি কিন্তু আমরা প্রতরণার স্বীকার হয়েছি।
শনিবার (১৬ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন’স কমপ্লেক্সের শিক্ষক লাউঞ্জে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন পরবর্তী সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
মোক্তার হোসেন বলেন, আমরা প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধার দাবিতে গত ৬ জানুযারী মানববন্ধন, ৭ জানুয়ারী অবস্থান ধর্মঘট, ৮ জানুয়ারি পূর্ণদিবস কর্মবিরতিসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করি। এরপর ছাত্রসংগঠন- জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, শিবির) ও সমন্বয়কদের সাথে মতবিনিময় করি। এছাড়া ১৪ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে মত বিনিময় করি। এসব কর্মসূচির বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের মৌখিকভাবে আশ্বাস দেয়।
তিনি আরো বলেন, আমরা সেই আশায় আশ্বস্ত হয়ে এতদিন অপেক্ষা করেছি। কিন্তু গত ১৪ আগষ্ট দেখলাম, রেজাল্ট হয়ে গেছে কিন্তু আমাদের সন্তানদের নেই। তখন আমরা বুঝলাম আমরা প্রতরণার স্বীকার হয়েছি। এজন্য আমরা স্থগিতকৃত আন্দোলন নিয়ে আবার সমবেত হলাম।
তবে মৌখিক আশ্বাসের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, আমরা তাদের বলেছি কোন প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা দেওয়া যায় কিনা এই ব্যাপারটা আমরা দেখবো। তার মানে এই না তাদের পোষ্য কোটা ফিরিয়ে দেওয়া হবে। এখানে প্রতারণার কোন বিষয়ই নেই।
এর আগে পোষ্যকোটা ছাড়াও ক্যাম্পাসের সকলের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, শিক্ষার্থীসহ শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পর্যাপ্ত আবাসিকতা,পরিবহণ ব্যবস্থার উন্নয়ন, শিক্ষকগনের জন্য ব্যক্তিগত চেম্বারের ব্যবস্থা ও গবেষনার জন্য অর্থ বরাদ্দ বৃদ্ধিকরণের দাবি জানান তারা।
এছাড়া শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য সুদমুক্ত ঋনের ব্যবস্থা, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের দাপ্তরিক কাজের পরিবেশ উন্নয়নের এবং ফ্যাসিবাদী, দূর্নীতিবাজ ও নিপীড়কদের দ্রুত বিচার ও শান্তি নিশ্চিতকরণের ৮ দাবি দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন,বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যগ্রোনোমি অ্যান্ড এগ্রিকালচার এক্সটেনশন বিভাগের প্রফেসর ড. মো. আব্দুল আলিম। এছাড়াও সংবাদ সম্মেলনে প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ড.মোহাম্মদ আমিরুল ইসলাম, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. কামরুল হাসান, অফিসার সমিতির সভাপতি মোক্তার হোসেন ও কোষাধ্যক্ষ, মাসুদ রানাসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও কর্মকর্তা কর্মচারীগণ উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য