,
রুহুল আমিন বাবুল, কোম্পানীগঞ্জ প্রতিনিধি:-
প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যে বেষ্টিত সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা সফর করেছেন বৃহত্তর জৈন্তিয়া উন্নয়ন পরিষদ এর নেতৃবৃন্দ।
শুক্রবার ২ মে সিলেট শহর থেকে সকাল ৯ ঘটিকায় এ সফরের উদ্দেশ্যে নেতৃবৃন্দরা রওয়ানা হন।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, প্রাচুর্য আর খনিজ সম্পদে ভরপুর সীমান্তবর্তী, গোয়াইনঘাট,
কানাইঘাট,জৈন্তাপুর ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলাকে নিয়ে গঠিত বৃহত্তর জৈন্তিয়া উন্নয়ন পরিষদ। বৃহত্তর জৈন্তার উন্নয়নে ১০ দফা দাবি নিয়ে কাজের অংশ হিসেবে আজকের সফরে ছিল সাদা পাথর, ভোলাগঞ্জ রোপওয়ে,হাইটেক পার্ক,কাটাখাল পরিদর্শন ও উপজেলার বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ।
সফর চলাকালে সাদাপাথর নৌকা ঘাট থেকে নৌকায় চড়ে ভোলাগঞ্জ রোপওয়ে (বাংকার) পরিদর্শনে দেখেন সেখানের লুটপাটের চিত্র, পরে সাদাপাথর স্পটে গিয়ে সারি সারি সাদাপাথর, স্বচ্ছ জলরাশি আর পাহাড়ের দৃশ্যে আনন্দময় মুহূর্ত পার করেন।
এসময় বৃহত্তর জৈন্তিয়া উন্নয়ন পরিষদ এর আহ্বায়ক এডভোকেট আব্দুল আহাদ বলেন, আজকের সফরে এরকম নান্দনিক দৃশ্যে মুগ্ধ হলাম কিন্তু দুঃখজনক বিষয় বাংলাদেশের সবার নজরকাড়া এ পর্যটন স্পটে নেই ট্যুরিস্ট পুলিশ। তাই দ্রুতই এখানে ট্যুরিস্ট পুলিশ দেয়ার জন্য কর্তৃপক্ষকে দাবি জানাচ্ছি। তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় দেখলাম ভোলাগঞ্জ রোপওয়ে (বাংকারে) পাথর হরিলুট চলছে এবং ধলাই সেতুও হুমকির মুখে। আজ আমরা স্বচক্ষে তা পরিদর্শন করে দেখলাম দিনে-দুপুরে ও হরিলুট চলছে। সেখানে প্রশাসনের নেই কোনো পদক্ষেপ।
সদস্য সচিব ও সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সভাপতি গুলজার আহমেদ হেলাল বলেন, প্রকৃতি দেখি যত মুগ্ধ হই তত কিন্তু আজকে ছিলো ভিন্ন একটি সফর। আমাদের বৃহত্তর জৈন্তিয়ায় প্রাচুর্য ভরপুর হলেও উন্নয়নের ছোয়া নেই বললেই চলে। এখানে গ্যাস উৎপাদন হলেও ঘরে ঘরে পৌঁছে নি, বৃহৎ পাথর কোয়ারী ভোলাগঞ্জ বন্ধ থাকায় পাহাড়ি ঢলে পাথর নেমে ধলাই নদীর উৎসমুখ ভরে নদীর গতিপথ পাল্টে গেছে। অন্যদিকে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা সিলেটের কোয়ারীগুলো নতুন করে খোলার আশ্বাস পেয়ে আনন্দ উচ্ছ্বাসের মধ্যে লিজ বন্ধ করায় আশাহত মানুষজন। এজন্য দ্রুতই কোয়ারী খুলে ও বৃহত্তর জৈন্তিয়ার ঘরে ঘরে গ্যাস পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থাসহ আমাদের ১০ দফা দাবি বাস্তবায়ন করতে কতৃপক্ষ আহ্বান করছি।
সাদাপাথর সফর শেষে কোম্পানীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল জলিলের সাথে সাক্ষাৎ করে টুকেরবাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে জুমার নামাজ আদায় শেষে মুসল্লীদের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও বৃহত্তর জৈন্তিয়া উন্নয়ন পরিষদ এর ১০ দফা দাবি নিয়ে আলোচনা এবং মেজবান রেস্টুরেন্টে মধ্যাহভোজ করেন নেতৃবৃন্দরা।
পরে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মুজিবুর রহমান মিন্টু, কোম্পানীগঞ্জ সমাজকল্যাণ পরিষদের সভাপতি ইব্রাহিম খলিল ও মেজবাণ রেস্টুরেন্টের স্বত্বাধিকারী নবী হোসেনের সাথে তাৎক্ষণিক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় বৃহত্তর জৈন্তিয়া উন্নয়ন পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল মনসুর চৌধুরী সাজু, মাস্টার আবুল খায়ের, ডাক্তার মুনতাজিম আলী, হাফিজ নিজাম উদ্দিন ও কোম্পানীগঞ্জ অনলাইন প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান নাঈম উপস্থিত ছিলেন।
নেতৃবৃন্দের কাছে জানতে চাইলে সংগঠনটি কেন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে উত্তরে বলেন: পৌণে এক শতাব্দী পূর্বে গ্যাস আবিষ্কৃত হলেও জৈন্তিয়ার ঘরে ঘরে এখনো গ্যাস সরবরাহ ও সংযোগ হয়নি। বিগত ফ্যাসিস্ট আমলে সিন্ডিকেটের কারণে পাথর কোয়ারী এখনো বন্ধ আছে। শ্রমিকরা কষ্টে দিনাতিপাত করছে। অভ্যন্তরীণ ও জাতীয় সড়কগুলোর অবস্থা ভালো নয়। বৃহত্তর জৈন্তিয়ার ঘরে ঘরে গ্যাস সংযোগ, বন্ধ পাথরকোয়ারী খোলা, এতদ অঞ্চলকে পর্যটন এলাকা ঘোষণা ও যোগাযোগ ব্যবস্থার সংস্কার সহ ন্যায্য দাবী না মানলে জোরালো আন্দোলন গড়ে তোলতে বৃহত্তর জৈন্তিয়া উন্নয়ন পরিষদ গঠিত হয়।
মন্তব্য