মোঃ শাকিল মোল্লা, রাজবাড়ী জেলা প্রতিনিধি:
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে দলিলভুক্ত জমিতে দোকানঘর নির্মাণ করতে গিয়ে বাধার মুখে পড়া এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে (ফেসবুক) অপপ্রচারের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেছেন দৌলতদিয়া ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামী সেক্রেটারি আবু সাইদ সোহাগ।
শনিবার (১১ অক্টোবর) বেলা ১২টার দিকে গোয়ালন্দ সাংবাদিক ফোরাম কার্যালয়ে আবু সাইদ সোহাগ ও তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সম্মেলনে তাঁর দুই ফুফাতো ভাই—মো. আব্দুল আলিম ও ওসমান শেখ উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে আবু সাইদ সোহাগ জানান, গোয়ালন্দ উপজেলার উজানচর নতুন ব্রিজ এলাকার পূর্ব উজানচর ভোলাই মাতুব্বরপাড়ায় বিএস ৪৬৫ নং দাগের দেড় শতাংশ জমি তাঁর পিতা ২০২৩ সালে স্বত্বদখলীয় মালিক মো. রমজান শেখের কাছ থেকে দলিলের মাধ্যমে ক্রয় করেন। পরবর্তীতে জমিটির নামজারিও সম্পন্ন হয়।
তিনি দাবি করেন, গত দুই বছর ধরে সেখানে বৈধভাবে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন।
সোহাগ আরও বলেন, “গত ৮ অক্টোবর আমি শ্রমিক নিয়ে দোকানঘরটি বড় করার কাজ শুরু করলে স্থানীয় আব্দুল কুদ্দুস নিজেকে ওয়ারিশ দাবিদার পরিচয় দিয়ে কাজ বন্ধ করে দেন এবং থানায় গিয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেন। পুলিশ এসে সেদিন কাজ বন্ধ রাখে। তবে আমি পুলিশকে বৈধ কাগজপত্র দেখালে তারা আমাকে পুনরায় কাজের অনুমতি দেয়। এরপর ১০ অক্টোবর সকাল ১০টার দিকে আবার কাজ শুরু করি। কিন্তু কিছু সময় পর থানা থেকে একদল পুলিশ এসে আমাকে, আমার বাবাকে ও শ্রমিকদের কাজ বন্ধ করতে বাধ্য করে।”
তিনি অভিযোগ করেন, এ সময়ের একটি ভিডিও কেউ পরিকল্পিতভাবে ধারণ করে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয় এবং সেখানে “জামায়াতে ইসলামী নেতা অন্যের জমি দখল করছেন” এমন বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করা হয়।
“এর ফলে আমার সামাজিক, রাজনৈতিক ও পারিবারিক সুনাম মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ণ হয়েছে,” বলেন আবু সাইদ সোহাগ। তিনি প্রশাসনের কাছে মিথ্যা অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা ও পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানান।
অন্যদিকে, জমির ওয়ারিশ দাবিদার আবদুল কুদ্দুস সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, বিএস ৪৬৫ নং দাগে মোট ২৩ শতাংশ জমি রয়েছে, যার মধ্যে তাঁর সাড়ে ৬ শতাংশ ওয়ারিশ সূত্রে প্রাপ্য। জমির মূল মালিক রমজান শেখ তাঁর বড় চাচা। তিনি গোপনে জমি বিক্রি করেছেন বলে অভিযোগ করেন কুদ্দুস।
তিনি বলেন, “জমির ওয়ারিশ মালিকানা ও দখল নিয়ে একাধিক মামলা আদালতে চলমান। সর্বশেষ ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখে আমি বাদী হয়ে রাজবাড়ী আদালতে বাটোয়ারা মামলা দায়ের করেছি। মামলা নিষ্পত্তির আগ পর্যন্ত কেউই ওই জমি দখল নিতে পারেন না।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গোয়ালন্দ ঘাট থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. বিল্লাল হোসেন বলেন,
“আবু সাইদ সোহাগের পিতা জমি ক্রয়ের দলিল ও নামজারি কাগজপত্র দেখিয়েছেন। তবে ওই জমি নিয়ে বাটোয়ারা মামলা আদালতে চলমান থাকায় সেখানে নির্মাণকাজ শুরু হলে সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে। তাই ওসি স্যারের নির্দেশে আমরা গিয়ে উভয় পক্ষকে কাজ বন্ধ রেখে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পরামর্শ দিয়েছি।”
মন্তব্য