ঝালকাঠি প্রতিনিধি
ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার রোলা নেছারিয়া দাখিল মাদ্রাসায় চলছে চরম অনিয়ম ও দায়িত্বহীনতা। শিক্ষকরা সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে নির্ধারিত সময়ের আগেই শিক্ষার্থীদের ছুটি দিয়ে বাড়ি চলে যাচ্ছেন। এমনকি প্রতিষ্ঠানের সুপারও সঠিক নিয়ম-কানুন সম্পর্কে অবগত নন। শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ব্যাহত হওয়ায় অভিভাবক ও এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
সরেজমিনে বুধবার (১৬ জুলাই) দুপুর সাড়ে ১২টায় দেখা যায়, মাদ্রাসার মূল ফটকে তালা ঝুলছে। এ সময় ষাটোর্ধ্ব নৈশপ্রহরী ইব্রাহিম জানান, “আজকে পরীক্ষা ছিলো, পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরে সবাই চলে গেছে।”
স্থানীয় হোসেন আহম্মেদ, মুছা, মারুফ, আমিনুল ও ইব্রাহিমসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, শিক্ষকরা ইচ্ছে মতো আসেন ও ছুটি দিয়ে চলে যান। তারা বলেন, “প্রতিদিন সব শিক্ষক ঠিকমতো আসে না। ক্লাসের মধ্যে বসে ঘুমায়। সুপারও মাদ্রাসায় ঠিকমতো আসেন না, নানা ব্যক্তিগত কাজে ব্যস্ত থাকেন।”
স্থানীয়দের অভিযোগ, মাদ্রাসার সুপার মো. সিরাজুল ইসলাম শিক্ষকদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে কোনো পদক্ষেপ নেন না। ফলে পড়াশোনার মান ক্রমেই নিম্নমুখী হচ্ছে। একসময় এই মাদ্রাসায় শিক্ষার্থী সংখ্যা বেশি থাকলেও এখন তা কমে যাচ্ছে। তারা বলেন, “এভাবে চলতে থাকলে কেউ আর সন্তানকে এখানে ভর্তি করতে চাইবে না।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুপার মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, “বুধবার আমি মাদ্রাসায় ছিলাম না, রাজাপুরে কাজে গিয়েছিলাম। পরীক্ষা শেষ হলে ছুটি দিয়ে চলে যায় সবাই। মাদ্রাসায় থেকে কী করবো? পরীক্ষা শেষ হলে সবাই চলে যায়।”
কতটায় মাদ্রাসা খোলা ও বন্ধের সরকারি সময় জানতে চাইলে তিনি বলেন, “সকাল ১০টায় শিক্ষকরা মাদ্রাসায় আসবে, ১০:১৫ মিনিটে ক্লাস শুরু হয় এবং বিকেল ৪টায় ছুটি হয়। তবে পরীক্ষার সময় পরীক্ষা শেষ হলে আমরা সাড়ে ১২টার মধ্যেই বন্ধ করি।” অন্যদিকে ঝালকাঠি জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ আব্দুল জব্বার বলেন, “প্রতিষ্ঠানে সকাল সাড়ে ৯টায় শিক্ষকদের উপস্থিত হতে হবে। ১০:১৫ মিনিটে ক্লাস শুরু হবে। পরীক্ষা চলাকালীনও বিকেল ৫টা পর্যন্ত প্রতিষ্ঠান খোলা রাখতে হবে। এর আগে বন্ধ করে চলে যাওয়ার কোনো নিয়ম নেই।”
এলাকার অভিভাবকদের দাবি,“ সরকারি নিয়ম অনুযায়ী কঠোর নজরদারি এবং কতৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিলে মাদ্রাসাটিতে আগের মতোই শিক্ষার পরিবেশ ফিরবে। না হলে অচিরেই প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ হওয়ার মুখে পড়বে।”
মন্তব্য