শুক্রবার, ৬ জুন ২০২৫
 

কাউখালীতে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভবন নির্মাণ কাজ ১৭ বছরেও শুরু হয়নি, এলাকাবাসীর মানববন্ধন

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ৪ জুন ২০২৫

------

এনামুল হক, বিশেষ প্রতিনিধি :

পিরোজপুরের কাউখালীতে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের  মূল ভবন নির্মাণ কাজ  টেন্ডার হওয়ার  ১৭ বছর পরেও  শুরু হয় নাই। যার ফলে দীর্ঘ দের যুগ ধরে স্বাস্থ্য সেবা ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে দেওয়া হয়। মরার উপর খড়ার ঘার মত গত ৩ জুন অস্থায়ী ভবনের উপরে গাছ চাপা পড়ে তিনজন ভর্তি রুগী গুরুতর আহত হয়। যার ফলে এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত হয় প্রশাসনের সাথে বাক বিতন্ডায় জড়াতে চাইলে উপজেলা বিএনপির আহবায় এস এম আহসান কবির ও  উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্বজল মোল্লা হাসপাতাল সমস্যার দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে কয়েক শত মানুষের উপস্থিতিতে বুধবার সকাল ১০ টা থেকে বারোটা পর্যন্ত ২ ঘন্টা ব্যাপী হাসপাতালে সামনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে বিএনপির কাউখালী উপজেলার আহবায় এস এম হাসান কবিরের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন জামাতের জেলা সহকারি আমির মাওলানা সিদ্দিকুর রহমান, বিএনপি’র উপজেলা যুগ্ন আহবায় জিয়াউল হাসান নিক্সন,যুবদলের আহ্বায়ক  মামুন তালুকদার, ইসলামী আন্দোলনের উপজেলার আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ কাসেমি, নারী নেত্রী সুরান্দা সমাদ্দার, কাউখালী প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি রতন কুমার দাস, বর্তমান সভাপতি এনামুল হক, সাংবাদিক নেতা রফিকুল ইসলাম প্রমূখ।

 উল্লেখ্য প্রথম দফায় টেন্ডার অনিয়মের কারণে  বাতিল হয়। পরবর্তী সময়ে দ্বিতীয়বার ছয় তলা বিশিষ্ট হাসপাতালের মূল ভবনের নির্মাণ কাজ করার জন্য টেন্ডার হয় ।

এই দফায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান অন্য দুই একটি ভবনের কাজ শুরু করলও হাসপাতালে মূল ভবন এর কাজ শুরু না করে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। যার ফলে এই উপজেলার লক্ষাদিক সাধারণ মানুষ চিকিৎসা সেবা থেকে  বঞ্চিত।

 অপর দিকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভবন না থাকার কারণে এখানে কোন ডাক্তার যোগদান না করে  অন্যত্র বদলি হয়ে চলে যায়।

উল্লেখ্য, কাউখালী  স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভবন ১৮ বছর আগে ঝুঁকিপূর্ণ  ঘোষণা করে স্বাস্থ্য  প্রকৌশল অধিদপ্তর। ২০০৮ সালে স্বাস্থ্য  প্রকৌশল অধিদপ্তর টেন্ডারের মাধ্যম বরিশালের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মের্সাস নূর ই এন্টার প্রাইজ প্রথম দফায়  কাজ শুরু করেছিল।

 অনিয়ম ফলে  ২০২৫ সালের দুদক তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।

 দ্বিতীয়বার ৩১ শয্যা হাসপাতাল থেকে ৫০ সয্যা বিশিষ্ট হাসহাতাল নির্মাণের জন্য প্রায় ২৬ কোটির টাকার বরদ্দের কাজটি ২০২২ সনে মেসার্স কহিনুর এন্টারপ্রাইজ দাদপুর লজ কাউনিয়া সদর, বরিশালের অনুকুলে এইচইডি কর্তৃপক্ষ  কার্যাদেশ প্রদান করে এবং ২৩ শে জুন ২০২৩ নির্ধারণ করে কাজ শেষ করার আদেশ দেওয়া হয়। অথচ ডাক্তার, নার্সদের আবাশিক ভবন, আংশিক কাজকরেন এবং হাসপাতালের মূল ভবনের কিছু পাইলিং পিলার তৈরি করে মোট কাজের মাত্র ১৬% কাজ করে ফেলে রাখেন বলে জানান স্বাস্থ্য প্রকৌশল  অধিদপ্তরের পিরোজপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী।

পবর্র্তী সময়ে স্বাস্থ্য  প্রকৌশলী অধিদপ্তর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজ সমাপ্ত করার জন্য দফায় দফায় লিখিত ভাবে নোটিশ করলেও তারা কোন কর্ণপাত না করে কাজটি ফেলে রাখে। ভবন সংকটের ফলে উপজেলা স্বাস্থ্য  সেবা ব্যবস্থ্যা ভেঙ্গে পড়েছে। জনগনের চাপের মূখে ২০২৩ সালের ৪ ডিসেম্বর স্বাস্থ্য  অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীর কার্যালয়ে ঠিকাদারের উপস্থিতিতে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি  মাসের মধ্যে কাজটি সমাপ্ত করার জন্য সর্বশেষ সময় বেধে দেয়। কিন্তু ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কোন কাজ না করায় স্বাস্থ্য প্রকৌশল  অধিদপ্তর তাদের কার্যাদেশ বাতিল করে পূনারায় টেন্ডার আহ্বান  করতে চাইলে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী  মহামন্য হাইকোর্টে ৮০% কাজ হওয়ার পর কার্যাদেশ বাতিল করা হয়েছে মর্মে বাতিল আদেশের বিরুদ্ধে রীট  দায়ের করেন। যার ফলে সকল কার্যক্রম স্থাগিত হয়ে যায়।হাইকোর্টে রিড মামলা নাম্বার ৩৯৩৪।  হাইকোর্টের মামলা নিষ্পত্তি না হওয়ায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর পূর্ণ টেন্ডারের কোন ব্যবস্থা করতে পারছে না। যার ফলে বর্তমানে  বিভিন্ন ভবনের ছাদের ঢালাই পূর্বের সেন্টারিং করা রডগুলো মরিচা পরে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। একদিকে নির্মান কাজের বিভিন্ন মালামল নষ্ট হচ্ছে, অপর দিকে ডাক্তার, নার্স ও স্টাফদের বসার এবং থাকার ভবন সংকটের ফলে ডাক্তার এবং অন্যান্য কর্মচারীরা অনত্র বদলী হয়ে চলে যাওয়ার স্বাস্থ্য সেবা  ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে।

স্বাস্থ্য প্রকৌশল  অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী তানজিলা ফেরদৌস সত্যতা স্বীকার  করে জানান, আদালতের নিদের্শনা মোতাবেক পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মন্তব্য

সর্বশেষপঠিত

এলাকার খবর

Developed By: Dotsilicon