সোমবার, ১২ মে ২০২৫
 

পত্নীতলায় সারহুল পার্বণ উদযাপন

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১১ মে ২০২৫

---

 পত্নীতলা (নওগাঁ) প্রতিনিধিঃ


‘হামনিকের সংস্কৃতি, হামনিকের পরিচয়’ এই শ্লোগানকে সামনে রেখে নেচে গেয়ে  নওগাঁর পত্নীতলায় পালিত হয়েছে ওরাওঁ জনজাতির সারহুল উৎসব।


রবিবার  (১১মে) দিনব্যাপী  নওগাঁ জেলা প্রশাসনের সহযোগিতা  এবং পত্নীতলা ও নওগাঁ জেলা আদিবাসী সমাজের সার্বিক সহযোগিতায় ,বাংলাদেশ ওরাওঁ বিডি কালচার ফোরাম আয়োজিত এই বর্ষবরণ উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তৃতা রাখেন নওগাঁ জেলা প্রসাক (ডিসি) মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল। বিশেষ অতিথি ছিলেন ধর্মমন্ত্রনালয়ের হিন্দু ধর্ম কল্যাণ ট্রাস্টের সচিব দেবেন্দ্রনাথ উরাঁও,  পত্নীতলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইউএনও মোঃ আলীমুজ্জামান মিলন।


 অনুষ্ঠানে উরাঁও সম্প্রদায়ের মানুষরা নেচে গেয়ে প্রধান অতিথিকে ফুল দিয়ে বরণ করেন এবং তাদের রিতি অনুযায়ী পা ধৌত করে দেন। পরে অতিথিরা আসন গ্রহন করলে তাদের ব্যাচ পরিধান করেন এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মাদল বাজিয়ে দলীয় নৃত্য ও তাদের নিজস্ব ভাষার গান পরিবেশন করেন।


অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক যোগেন্দ্র নাথ সরকার। প্রধান আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন কারিতাস রাজশাহী অঞ্চলের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ড.আরোক টপ্প্য পিএইচডি।


 হেমন্ত কেরকেটা’র  সভাপতিত্ব এবং  রিপন তির্কী ও মানিক এক্কা’র সঞ্চালনায় এ সময় উপস্থিত ছিলেন পত্নীতলা সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার  শরিফুল ইসলাম, সহকারী কমিশনার (ভূমি)  জুয়েল মিয়া, আদিবাসী ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী নেতা হরেন্দ্রনাথ শিং, রনিকান্ত তির্কী, আমিন কুজুর, দীপংকর লাকড়্, সুবোধ তির্কী,সুধীর তির্কী, যতিন টপ্প্য,

নিরেন চন্দ্র খালকো, কল্যাণী মিন্জী, বিপেন্দ্র নাথ মিন্জী,পূরণ বাকলা সহ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সম্প্রদায়ের বিভিন্ন গোত্রের মানুষ, সাংবাদিক ও  সুধিজন প্রমূখ।


 সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়  এই উৎসবে গ্রামবাসীরা পূজা করেন এবং এই দিনে চাষ করা নিষিদ্ধ। এই উৎসবের এক দিন আগে গ্রামবাসীরা উপবাস করেন। তরুণ-তরুণীরা পাশের বন থেকে শাল ফুল সংগ্রহ, কাঁকড়া ও মাছ ধরে থাকেন।


উৎসব উপলক্ষে গ্রামবাসী ঢোল, নাগারা ও মাদল বাজাতে বাজাতে অর্চনা করেন ও শাল গাছের পূজা করেন। শালাই বা শাল গাছের ফুলকে দেবতাদের নিবেদন করা হয়। গ্রামের পুরোহিত-পূজারীরা বর্ষবরণ উপলক্ষে গ্রামের সৌভাগ্যের জন্য শাল ফুল, ফল, সিঁদুর, তিনটি মোরগ গ্রাম দেবতাকে বলি দেন।


জলের পাত্র রেখে এবং পরের দিন পরের বছরের আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেন। গ্রামবাসীদের মধ্যে শাল গাছের ফুল বিতরণ করা হয়। গ্রামবাসী তাদের বাড়িতে তাদের পূর্বপুরুষদের আত্মার পূজা করেন এবং তাদের বিভিন্ন খাবার দেন।


তাদের পূর্বপুরুষদের আত্মাকে খাবার নিবেদন করার পরই তারা খাবার খান। তারপর গান, ঢোল, নাগারা ও মান্দার তালে গ্রামবাসীরা উৎসবে মেতে উঠেন।

মন্তব্য

সর্বশেষপঠিত

এলাকার খবর

Developed By: Dotsilicon