মো.আমিনুল হক, ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার উচাখিলা মৌজায় রেকর্ডকৃত ব্যক্তিমালিকানাধীন জমি কোনো ধরনের নোটিশ বা ক্ষতিপূরণ ছাড়াই ভেঙে দেয় উপজেলা প্রশাসন। ভাঙচুরের কয়েক দিনের মাথায় ওই জমিতে বালু ফেলে দখল চেষ্টা করে উপজেলা প্রশাসন। এমনটিই জানায় ভুক্তভোগী পরিবারগুলো। তবে তীব্র সমালোচনার মুখে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এরশাদুল আহমেদ বদলি হয়ে যান ইউএনও হঠাৎ বদলি হয়ে যান। দায়িত্ব প্রাপ্ত নতুন ইউএনও যোগদানের পরপরই ভুক্তভোগীরা তার নিকট সেই বিষয়ে অভিযোগ জানান এবং নতুন ইউএনও জায়গাটি সরেজমিনে এসে এর একটি চূড়ান্ত সমাধান দেবার বিষয়ে আশ্বস্ত করেন। ক’দিন পর-ই নতুন ইউএনও উপজেলা ভূমি কমিশনারকে নিয়ে জায়গাটি সরেজমিনে পরিদর্শন করেন এবং ভুক্তভোগীদের দ্রুত স্কেচ ম্যাপ করে সার্ভেয়ার দ্বারা মেপে বুঝিয়ে দিবেন বলে জানান।
তবে এর পর বেশ কয়বার অনুরোধ করা হলেও এখন পর্যন্ত কোনো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি—এমন অভিযোগ করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার।
ভুক্তভোগী পরিবার জানায়, উচাখিলা মৌজার দাগ নম্বর ৭৬২ ও খতিয়ান নং ১৫৪ এ অবস্থিত তাদের পৈত্রিক সম্পত্তিতে বৈধ রেজিস্ট্রি দলিল, মাঠ পর্চা, বি আর এস, খাজনা ও খারিজের কাগজ রয়েছে এবং দীর্ঘ ৪০ বছরেরও অধিক সময় সেটি তাঁদের ভোগদখলে ছিল । কিন্তু চলতি বছরের ১৪ এপ্রিল, ঈদুল-ফিতরের পূর্ব মুহুর্তে উপজেলা প্রশাসনের লোকজন কোনো পূর্ব নোটিশ ছাড়াই হঠাৎ এসে স্থাপনা ভেঙে দেয়।প্রশাসনের অভিযোগ এটি সরকারি খাস জমি, জমিটি সায়রাত রেজিস্ট্রার অর্থাৎ ৬ নং রেজিস্ট্রার এ জমিটি হাটের নামে অন্তর্ভুক্ত’। এই যুক্তিতেই তারা ভাঙার সিদ্ধান্ত নেয়।
কিন্তু ভোক্তভোগীরা জানায় হাটের নামে একই দাগে সরকারের আলাদা সম্পত্তি কেনা আছে কিন্তু এটা বাজারের জমি নয়।
আমরা সকল দলিলাদি হাতে নিয়ে গিয়েছিলাম এবং দেখার অনুরোধও করেছিলাম, কিন্তু কেউ শুনেনি, দেখেনি!এক নিমিষেই আমাদের পরিবারগুলোকে নিঃস্ব করে পথে নামিয়ে দেয় প্রশাসন। অসহায় কন্ঠে বলছিলেন, ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা।
ভুক্তভোগীদের দাবি, ন্যায্য মালিক হয়েও তাঁরা প্রশাসনিক ভুলের শিকার হয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে তাঁরা জেলা জজ আদালতে মামলা দায়ের করবেন এবং জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ জমা দিবেন এবং দ্রুত তদন্ত ও পুনরায় জমি ফিরিয়ে দেবার দাবি করবেন।
এ বিষয়ে স্থানীয় চৌকি আদালতের আইনজীবি মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান আব্দুল্লাহ বলেন, ‘আমি দলিলাদি দেখেছি,এটি সরকারি খাস জমি নয়। তবে নকশাতে জমির প্লট আঁকা হয়নি। যার ফলে মালিকানা এবং খাস জমির অবস্থান স্পষ্ট ছিলোনা। সরকার পক্ষ ভুল করেই হয়তো এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। পরবর্তীতে আদালতে বাজার পেরিফেরির কারণ দর্শিয়েছেন। তবে আইন মোতাবেক বাজার পেরিফেরির মধ্যে কোনো ব্যক্তিমালিকানাধীন জমি থাকলে তা আইন অনুযায়ী অধিগ্রহণ না করে ভাঙা সম্পূর্ণ বেআইনি। এমনকি পূর্ব নোটিশ, শুনানি ও ক্ষতিপূরণ ছাড়া এ ধরনের পদক্ষেপ নিয়মবহির্ভূত’।
এ বিষয়ে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা রহমান বলেন, ‘তাদেরকে কিভাবে উচ্ছেদ করেছে সে বিষয়ে আমার জানা নেই। কেননা, ঘটনাটি পূর্বের। তবে সায়রাত রেজিস্ট্রার অর্থাৎ ৬ নং রেজিস্ট্রার এ পুরো জমিটি হাটের নামে অন্তর্ভুক্ত’
মন্তব্য