মাহফুজ রাজা, ভ্রম্যমান প্রতিনিধি
কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলায় চলছে ভুট্টা ও বোরো ধান কাটা-মাড়াইয়ের কাজ। বর্তমানে কৃষকরা মাড়াইয়ের পাশাপাশি ধানের খড় ও ভূট্টা শুকাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। আর এসব ভুট্টা,ধান ও ধানের খড় শুকাতে দেওয়া হচ্ছে রাস্তার ওপর। এসবের উপর দিয়ে আতঙ্কে চলাচল করছেন পথচারীসহ ছোট-বড় যানবাহন। ফলে সৃষ্টি হচ্ছে দুর্ঘটনার আশঙ্কা।
জানা যায়,মহাসড়ক আইন-২০২১ অনুযায়ী, ফসল, খড় বা অন্য কোনো পণ্য শুকানো বা এ ধরনের কোনো কাজে মহাসড়ক ব্যবহার করা যাবে না। তবুও প্রতি বছরের বোরো ধান কাটার সময় মহাসড়ক দখল করে ধান শুকানো হয়।
রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি সড়ক দূর্ঘটনার অন্যতম কারণ বলে বিবেচিত হয়।কেননা, এর মাধ্যমে রাস্তা পিচ্ছিল, ব্রেক ফেল, রাস্তার গর্ত দেখতে না পেয়ে সকল প্রকার যানবাহন মারাত্মক দূর্ঘটার স্বীকার হচ্ছে প্রতিনিয়তই।
শুক্রবার(৯ মে)উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ছোট-বড় কাঁচা- পাকা সড়কে কৃষকরা তাদের খড়,ধান ও কোথাও কোথাও ভূট্টা শুকাচ্ছেন। এসবের উপর দিয়ে ভয়ে এবং আতঙ্কে চলাচল করছে বাস, ট্রাক, মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন ধরনের ছোট বড় যানবাহন। সড়কের বিভিন্ন স্থানে দেখা যায় এসবের উপরে চলতে গিয়ে পিছলে পড়ছে ছোট যানবাহন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন অটোচালক বলেন, ‘প্রতিদিন রাস্তায় আমাদের গাড়ি নিয়ে যেতে হয়। গাড়ি ভর্তি যাত্রী থাকেন। ভূট্টা ও ধানের সময় হলেই রাস্তায় শুকানোর হিড়িক পড়ে। এমনিতে ছোট রাস্তা তার উপর কৃষকরা খড় শুকাতে দেওয়ায় গাড়ি নিয়ে চলতে খুব অসুবিধা হয়।’ স্থানীয় এক মোটরসাইকেল চালক শাহিন আলম বলেন, ‘সড়কের প্রায় স্থানে খড় দিয়ে ভর্তি। রাস্তাগুলো খানাখন্দে ভরা। খড়ের জন্য কিছুই বুঝা যাচ্ছে না। মোটরসাইকেল নিয়ে যাওয়ার সময় কয়েকবার স্লিপ কেটেছি।’
শিক্ষার্থী ফয়েজসহ কয়েক জন যাত্রী ও পথচারী বলেন,প্রতি বছর খড়ের কারণে ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। এবারও রাস্তায় খড় শুকানো শুরু হয়েছে। আমরা আশা করছি প্রশাসন বিষয়টি দেখবে।
উপজেলার গ্রামীণ অনেক পাকা রাস্তায় দেখা যায়, কেউ কেউ রাস্তায় দাঁড়িয়ে থেকে খড় উল্টিয়ে দিচ্ছে। আবার কোথাও কোথাও ধানের ওপর দিয়ে যেন গাড়ি যেতে না পারে সেজন্য ইট দিয়ে রেখেছে। সড়কের দুই পাশেই ধান ও খড় শুকানোর জন্য রাস্তা সংকুচিত হয়ে পড়েছে। এতে ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন। অনুসন্ধানে জানা যায়, সড়কের কাছে যাদের বাড়ি রয়েছে তারাই এসব কাজ করছেন। এসবের কারণে প্রতিবছর দুর্ঘটনা হলেও উপজেলা প্রশাসন কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেন না। উপজেলা প্রশাসন থেকে মাইকিং করে এ বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা দিলে অনেকটা কমে যেত।
মন্তব্য